Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২

Tour : পেরিয়ারের সৌন্দর্যের মধ্যে দুদিন

Two-days-in-the-beauty-of-Periyar

পেরিয়ারের সৌন্দর্যের মধ্যে দুদিন

সুনীল কুমার রায়


কেরালার পেরিয়ারে এলাম দুদিনের জন্য। বর্তমানে এখানকার নাম পেরিয়ার ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙচুয়ারি। 'পেরি' কথাটির অর্থ বড় ‌এবং 'আর'‌ কথাটির অর্থ নদী। দুটি মিলিয়ে পেরিয়ার অর্থাৎ বড় নদী। আমরা উঠেছি হাই রেঞ্জ রেসিডেন্সিতে।

তামিলনাড়ু সীমান্তে কোট্টায়াম–মাদুরাই সড়কে কেরল ভুখন্ডে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত কুমিলি। এই কুমিলির বৈচিত্র্যময় অন্যতম আকর্ষণ সড়ক যোগাযোগকারি পেরিয়ার। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সিভাগিরি, দেবীকুলাম গিরি থেকে ২৪৪ কিলোমিটার অতিক্রম করে পেরিয়ার আরব সাগরে মিশেছে।এটি কেরলের বৃহত্তম নদী। একে কেন্দ্র করেই শহর।

পেরিয়ার মূলত অরণ্যভূমি। ১৮৯৫ সালে পেরিয়ার কৃষি ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে কৃত্রিম উপায়ে ৪৬ মিটার গভীর এবং ২৬ বর্গকিলোমিটার লেক কাটা হয়। এখানকার মহারাজা ১৮৯১ সালে ৫৫ কিলোমিটার জুড়ে এটিকে একটি স্যাঙচুয়ারি হিসেবে তৈরি করেছেন। ১৯৫০ সালে এর নাম হয় পেরিয়ার ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙচুয়ারি। এটি ১৯৭৯ সালে টাইগার রিজার্ভের শিরোপা পায়।

হোটেল থেকে চারজনকে নিয়ে আড়াই হাজার টাকার চুক্তিতে র‌ওনা হলাম SATHAM জঙ্গল সাফারি করতে। পথে পেরিয়ার নদী, Kozhikkam, Pamba, Gavi র ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি। রাস্তা অস্বাভাবিকরকমের বিপদজনক। অভিজ্ঞতা ছাড়া গাড়ি চালিয়ে যাওয়া ভাবাই যায় না।

আমরা অর্থ ও শারীরিক পরিশ্রমে বণ্যজন্তুদের দেখতে যাই। দেখতে পেলে ফটো তুলি, আনন্দ পাই। কিন্তু ওরা অবলাজীব। আড়ালে, আবডালে নিজেদের লুকিয়ে আমাদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখে। আমরা বুঝি না যে ওদেরও একটা জীবন আছে, বাঁচার অধিকার আছে। তাই আমরা বের হলে ওরা স্বাভাবিক ছন্দে বেড়িয়ে পরে।

এখানে গ্রীষ্মকালে হাতিরা দলবেঁধে লেকের পাড়ে আসে, স্নান করে। অসাধারণ দৃশ্য। মাছ ধরতে ফাঁদ পাতে ভোদরেরা। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, শম্বর দেখা যায়। খুবই চিত্তাকর্ষক। এখানে একাধিক প্রজাতির সাপ, বুনো কুকুর, চিতাবাঘ, বাইসন, হরিণ, প্যান্থার, কালো রঙের ল্যেঙ্গুর দেখা যায়। প্রায় ২৬৫ প্রজাতির পাখি আছে এখানে।

এত বিচিত্র সম্ভারে এবং সহাবস্থানের গভীর অরণ্যে আমাদের নিয়মিত যাতায়াতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঢুকলাম পেরিয়ার ভ্যালি (Farm fresh spices and factory outlet)। দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, আদা, জায়ফল সহ একাধিক মশলার বাগানে। চারিদিকে মসলার গন্ধে ম ম করছে। অসাধারণ। কেনার ব্যবস্থা আছে। 

ভারতের প্রায় পঁচাত্তর ভাগ মসলা বিশেষতঃ এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ এখান থেকে সরবরাহ হয়। পথে প্রচুর চা বাগান। কখনো কখনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সবুজ মালা ডুয়ার্সকে হার মানিয়ে দেয়। তবে চায়ের মান উন্নত নয়। মাঝেমধ্যে কফির বাগিচা আছে। 

তবে অবাক হ‌ওয়ার বিষয়, চা খাওয়ার দোকানের খুব অভাব। এখানে পান, তামাক জাতীয় কিছু, গুটখা হাজার চেষ্টা করলেও পাওয়া যাবে না। এসবের উপর নিয়ন্ত্রন জারি আছে। রাস্তায় পিক ফেললে শাস্তি। 

বিভিন্ন পোষাকের চা শ্রমিক দেখলাম। তবে এদের চায়ের পাতা তোলার পদ্ধতি পৃথক। পেরিয়ারকে বলা হয় লাইভ লাইম অব কেরালা। আবার বলা হয় Father of Dravidian movement. ‌বিদায় পেরিয়ার।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন