Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২

পরিবেশ বান্ধব বাইক বানিয়ে চমক ১২ ক্লাসের ছাত্রের

Eco friendly bike

সমকালীন প্রতিবেদন : ২০২২ সালের শেষের দিকে দাঁড়িয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বিজ্ঞানীদের মাথাব্যথা বেড়েই চলেছে। এই বিশ্ব উষ্ণায়নের একটি অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে পেট্রোল, ডিজেলে চালিত গাড়ি থেকে বেরোনো ধোঁয়াও। নামিদামি কোম্পানিরা এই সমস্যার কথা ভেবে ইতিমধ্যেই বাজারে আনা শুরু করেছে বিভিন্ন ইলেকট্রিক ভেইকেল, যা কিনা চলবে ব্যাটারির দ্বারা। 

পরিবেশ বান্ধব বাইক বানানোর বিষয়ে শুধু নামিদামি কোম্পানিগুলির মাথাতেই চলছিল না, যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ১২ ক্লাসের ছাত্র শুভ্রজ্যোতি রায়ের মনেও বহুদিন ধরে এই ভাবনা খেলা করছিল। তাঁর ভাবনায় ছিল, কিভাবে এমন বাইক তৈরি করা সম্ভব, যা মানুষের প্রতিদিনের কাজকর্মে সাহায্য করবে কিন্তু দূষণও ছড়াবে না।

আর পরিবেশ সম্পর্কে এই চিন্তাই হয়ে উঠল শুভ্রজ্যোতির জন্য অনুপ্রেরণা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে সে বানিয়ে ফেলল একটি ই.ভি.বাইক। একসময় ভারতবর্ষের সকলের প্রিয় বাইক ছিল Rx100। যদিও পরে অত্যাধুনিক দূষণ ও আওয়াজ এর কারণে ভারতে ব্যান হয়ে গিয়েছিল বাইকটি। 

সেই Rx100 বাইকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দিয়ে, রয়েল এনফিল্ডের পেট্রোল ট্যাংক, ই রিক্সার মোটর ও আলাদা একটি বাইক থেকে দুটি চাকা সহ আরও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা স্থান থেকে জড়ো করে এই বাইকটি বানিয়েছে সে।

ছোটবেলা থেকেই যেমন পড়াশোনায় ভালো, তেমনি বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানোর শখ শুভ্রজ্যোতির। এর আগেও বাড়িতে বসেই হোম অটোমেটিক স্পিকার, মাইক্রো কন্ট্রোলার, আর সি কার এবং আরও বিভিন্ন জিনিস বানিয়েছে সে।

বহুদিন ধরে শুভ্রজ্যোতির ইচ্ছে ছিল, সে নিজের হাতে করে এমন একটি বাইক বানাবে। কাগজে বাইকের ব্লু প্রিন্টও তৈরি করে ফেলেছিল। শেষমেষ বাড়িতে বসে নিজের ইচ্ছাকে রূপদান করল সে। বাইকটি চালানোর জন্য একটি শক্তিশালী লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার করেছে সে। সবথেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিটিও শুভ্রজ্যোতি নিজের হাতেই বানিয়েছে। 

বাইকটি এখন নিজের প্রথম ধাপে রয়েছে। ব্যাটারিটি একবার সম্পূর্ণ চার্জ করলে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাত্রা করা যায়। সর্বোচ্চ গতিবেগ এই মুহূর্তে ২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। অন্যান্য বাইকের মতো অনেক গতি না হলেও খারাপ নয় মোটেই।

ভবিষ্যতে কিভাবে বাইকের ফুল ব্যাটারিতে মাইলেজ এবং সর্বোচ্চ গতিবেগ বাড়ানো সম্ভব, তার ওপরেও কাজ করবে সে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ছাত্র শুভ্রজ্যোতির এমন একটি কাজে অত্যন্ত গর্বিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে সকল মাস্টারমশাই এবং দিদিমনিরা। 

তার বন্ধুরাও তার এই সাফল্যে অত্যন্ত খুশি ও আনন্দিত। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য মাস্টারমশাইদের মতে, ছাত্র শুভ্রজ্যোতির এই কাজের কারণে স্কুলের নাম আরও উজ্জ্বল হবে এবং চারিদিকে স্কুলের নাম ছড়িয়ে পড়বে।

শুভ্রজ্যোতির বানানো এই বাইকটি যেহেতু ব্যাটারি দ্বারা চালিত, সেই জন্য এটি চালানোর জন্য কোনওরকম লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়বে না। এটি চালানো এতটাই সহজ যে, যে কেউ এটিকে চালাতে পারবে কিন্তু নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হেলমেট অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে চালানোর সময়।

শুভ্রের এই সাফল্যে তার পরিবার, স্কুল শিক্ষক এবং সহপাঠীদের আনন্দ ও উৎফুল্লতা দেখে সে আরও অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। তার আশা, আগামীতেও পরিবারের এবং সকলের সমর্থন নিয়ে আরও এগিয়ে যাবে এবং বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র বানাতে সক্ষম হবে সে।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন