বাঙালির রাখী ও রবীন্দ্রনাথ
স্বপন ঘোষ
বাঙালি সমাজে রাখীবন্ধনকে পরিচিতি দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯০৫ এর ১৬ অক্টোবর কার্জনের বঙ্গ বিভাজনের হীন চক্রান্তের প্রতিবাদ কবি জানিয়েছিলেন রাখীবন্ধনের অভিনব কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে। বাংলার বাইরে রাখীবন্ধনের দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। তবে তা ভাই-বোনের চিরকালীন সম্পর্কের বন্ধন হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত।
রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগের পর রাখীবন্ধন কিন্তু বাঙালির কাছে নিছক ভাই-বোনের বন্ধনের সীমায় আটকে নেই। আমাদের কাছে রাখীর গুরুত্ব আলাদা। এই বাংলায় রাখী সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক। বিভেদকামী, সংকীর্ণমনা, কুচক্রীদের বিরুদ্ধে আমাদের মনের মধ্যে প্রতিরোধের দেওয়ালকে মজবুত করার দিন।
গুরুদেবের যে উদ্যোগ ইংরেজ সরকারকে হতবাক করে দিয়েছিল, তাকে আমরা আমাদের মনের মধ্যেকার শ্বাপদকে বশ করতে ব্যবহার করতে পারি। ধর্মগত, সম্প্রদায়গত, জাতিগত বিভেদের সবচেয়ে বড় উৎস আমাদের মন। মনের শিক্ষা, মনের প্রসারণ, মানসিক উদারতা একদিকে আমাদেরকে মানুষ হিসাবে উচ্চ করে তোলে, পাশাপাশি সমাজেও তার বিশেষ প্রভাব পড়ে।
কবিকে আর একবার স্মরণ করে বলি, এই রাখীবন্ধন হোক আমাদের মানসিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার অঙ্গীকার। জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতার মতো ব্যধিগুলিকে নিরসনের উপায় অনুসন্ধানের দিন। মানবতাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। আজকের রাখীবন্ধন সেই ধর্মপ্রচারের পথ হোক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন