সমকালীন প্রতিবেদন : বনগাঁ পুরসভায় নতুন করে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। পুরসভার প্রধান গোপাল শেঠের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসেরই ৯ জন কাউন্সিলর। বুধবার বিকেলে বনগাঁ পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং এসডিও-র দপ্তরে পৌঁছে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থার আবেদন জমা দেন। বনগাঁ পুরসভায় মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ২২। সেই হিসেবে ৯ জনের এই অনাস্থা আবেদন পুরপ্রধানের অবস্থানকে যথেষ্ট অনিশ্চিত করে তুলেছে।
তৃণমূলের অন্দরে বিরোধ বহুদিন ধরেই প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যে জমছিল বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। দিন কয়েক আগেই তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রধান গোপাল শেঠকে পদত্যাগের চিঠি পাঠানো হয়। এর ঠিক পরেই তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দায়িত্বভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরজিৎ দাসের হাতে অর্পণ করেন এবং ছুটিতে চলে যান।
তবে সুরজিৎ দাস দায়িত্বভার গ্রহণ করতে গেলে পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার নিয়মগত জটিলতার কথা বলে তাঁকে দায়িত্ব নিতে দেননি। সেই সময় তিনি এব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশও করেন। ফলে কার্যত নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় পড়ে যায় বনগাঁ পুরসভা।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার বনগাঁ তৃণমূল জেলা পার্টি অফিসে বৈঠকে বসেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। বৈঠক শেষে মোট ১০ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করে তা পুরসভার কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। যদিও বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন কাউন্সিলর অনাস্থাপত্রে সই না করেই সভাস্থল ছেড়ে চলে যান।
এব্যাপারে পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক সুরেশচন্দ্র হীরা জানান, 'আজ পুরসভার ৯ জন কাউন্সিলর একটি কাগজ জমা দেন, যার মূল বিষয় পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধান গোপাল শেঠের বিরুদ্ধে অনাস্থাপ্রস্তাব। আমরা চিঠিটি রিসিভ করে নিয়েছি।' এই চিঠির কপি মহকুমা শাসকের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়।
দলের পক্ষ থেকে জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস এব্যাপারে জানান, দলের নির্দেশে পদত্যাগ করারজন্য পুরপ্রধান গোপাল শেঠকে দুবার চিঠি পাঠানো হয়। ১৫ নভেম্বর তার চরম সময়সীমা পার হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দলের ৯ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ম অনুযায়ী হবে। আর দলের বেশ কিছু কাউন্সিলর তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দিয়েছে। সেব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। এব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বনগাঁ পুরসভার প্রধানের পদে গোপাল শেঠের পদত্যাগের এই ঘটনাকে ঘিরে বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এবার অনাস্থা প্রস্তাবকে ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হল। আগামী দিনে পুর প্রশাসনে কী পরিবর্তন আসতে চলেছে— এখন তার দিকেই নজর স্থানীয় মানুষের।









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন