Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫

পিন নয়, আঙুলের ছাপ ও মুখের স্বীকৃতিতে করা যাবে ইউপিআই লেনদেন!

 

UPI-transactions

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌দীপাবলি ও কালীপুজোর আগে ডিজিটাল লেনদেনে বিপ্লবী পরিবর্তন আনল কেন্দ্র। উৎসবের কেনাকাটা ও আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও নিরাপদ করতে ‘ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস’ -এর নিয়মে বড় রদবদল করা হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় আর পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (পিন) দিতে হবে না—এর বদলে ব্যবহার করা যাবে আঙুলের ছাপ বা মুখের স্বীকৃতি। সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ভারতীয় ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় শুরু হবে এক নতুন অধ্যায়।

বর্তমানে ইউপিআই অ্যাপে টাকা পাঠানোর সময় বাধ্যতামূলকভাবে পিন দিতে হয়। কিন্তু নতুন নিয়মে সেই জায়গা নিচ্ছে বায়োমেট্রিক প্রমাণীকরণ। অর্থাৎ, লেনদেনের অনুমোদনে ব্যবহারকারীর আঙুলের ছাপ বা মুখাবয়বের স্ক্যানই যথেষ্ট হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আর্থিক পরিষেবা সচিব এম. নাগরাজু এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আঙুলের ছাপ ও মুখাবয়বের স্বীকৃতি অনুমোদিত হওয়ায় গ্রাহকদের আর পিন মনে রাখতে হবে না। নিরাপত্তা ও সুবিধা—দুই-ই বাড়বে।” এক কথায়, ইউপিআই সিস্টেমে বায়োমেট্রিক যাচাই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে।

নতুন এই বায়োমেট্রিক ইউপিআই ব্যবস্থায় দিনে সর্বোচ্চ ₹৫,০০০ পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। এই সীমা নির্ধারণ করেছে ইউপিআইয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। ভবিষ্যতে এই সীমা বৃদ্ধি করার বিষয়টি এনপিসিআই বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন আর্থিক পরিষেবা সচিব। তিনি বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে লেনদেন সীমিত রাখা হচ্ছে নিরাপত্তা যাচাইয়ের জন্য। সবকিছু স্থিতিশীল হলে ধীরে ধীরে সীমা বাড়ানো হবে।”

এখনও পর্যন্ত ইউপিআই পিন তৈরি বা রিসেট করতে ডেবিট কার্ডের বিবরণ ও ওটিপি ব্যবহার করতে হয়। নতুন নিয়মে তা বদলে আধারভিত্তিক মুখাবয়বের স্বীকৃতি দিয়েও পিন সেট বা রিসেট করা যাবে। এর ফলে যারা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন না, তাঁরাও সহজেই ইউপিআই পরিষেবায় যুক্ত হতে পারবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে একটি “next-generation upgrade”—যা ভবিষ্যতের ক্যাশলেস অর্থনীতির পথ আরও প্রশস্ত করবে।

এনপিসিআই-এর জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী— একই জায়গায় বারবার টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও প্রতি লেনদেনে ব্যবহারকারীর অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক হবে। কোনও গ্রাহক যদি পিন রিসেট করেন, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ইউপিআই অ্যাপের বায়োমেট্রিক ফিচার সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হবে। ইউপিআই ব্যবহারকারী যদি ৯০ দিন ধরে কোনও লেনদেন না করেন, তবে তাঁর অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে—তবে প্রয়োজনে ব্যবহারকারী নিজেই সেটি পুনরায় সক্রিয় করতে পারবেন।

ডিজিটাল লেনদেন এখন ভারতের অর্থনীতির অন্যতম ভরকেন্দ্র। উৎসবের মরসুমে বাজারচলতি লেনদেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। পিনমুক্ত বায়োমেট্রিক অনুমোদন চালু হলে সময় বাঁচবে, পিন ফাঁস বা প্রতারণার ঝুঁকি কমবে এবং সিনিয়র নাগরিক বা কম ডিজিটাল-সচেতন ব্যবহারকারীরাও সহজে ইউপিআই ব্যবহার করতে পারবেন। 

বায়োমেট্রিক ডেটা শুধুমাত্র অনুমোদিত ডিভাইসে ও নিরাপদ সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। কোনও অ্যাপে মুখ বা আঙুলের ছাপ দেওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে সেটি সরকার-স্বীকৃত ইউপিআই অ্যাপ (যেমন BHIM, Paytm, GPay, PhonePe ইত্যাদি)। পাবলিক ওয়াই-ফাই বা অনিরাপদ নেটওয়ার্কে লেনদেন করা থেকে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন