সমকালীন প্রতিবেদন : রাজ্যে আপাতত এই মাসে শুরু হচ্ছে না ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া অর্থাৎ SIR। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক দফতরের সূত্রে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়া নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিইও দফতর সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুজোর পর রাজ্যে দীপাবলি, ভাইফোঁটা, ছট এবং জগদ্ধাত্রী পুজোসহ একাধিক উৎসব রয়েছে। ১৮ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি ছুটিও থাকছে। এই পরিস্থিতিতে অক্টোবরে এসআইআর কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, “অক্টোবর মাসে টানা উৎসবের কারণে কর্মীরা ছুটিতে থাকবেন। তাই নভেম্বরেই এই প্রক্রিয়া শুরু করা বাস্তবসম্মত।”
এর আগে উপ-মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী কলকাতায় এক বৈঠকে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এসআইআর সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর দুই দিনের রাজ্য সফরের পর কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের কাজের গতি নিয়ে কমিশন উদ্বিগ্ন। এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “এসআইআর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই দেশের বহু রাজ্যে শেষ হয়েছে বা শেষের পথে। পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে পড়লে জাতীয় পর্যায়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই সাত দিনের বেশি দেরি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।”
এদিকে, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ২২৬ জন ইআরও-এর নিয়োগ কমিশনের নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুযায়ী হয়নি। শুভেন্দুর দাবি, “এই অনিয়ম রাজ্যের ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।” তিনি অবিলম্বে সংশোধনমূলক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
কমিশন সূত্রে অবশ্য স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ইআরও এবং সহকারী ইআরও নিয়োগের নিয়ম কোনও অবস্থাতেই পরিবর্তন করা হবে না। কমিশনের এক সিনিয়র আধিকারিক বলেন, “কমিশনের বার্তা একেবারে পরিষ্কার—প্রক্রিয়াগত ত্রুটি বা নিয়মভঙ্গ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”
ইলেকশন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের স্থায়ী সরকারি কর্মচারী, বিশেষত সরকারি স্কুলের শিক্ষক ও কর্মীদেরই বুথ লেভেল অফিসার অর্থাৎ বিএলও হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পর্যাপ্ত স্থায়ী কর্মী না থাকলে তবেই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে সেই ক্ষেত্রে জেলার জেলাশাসককে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অনুমোদন নিতে হবে।
পাশাপাশি, ইআরও নিয়োগের ক্ষেত্রেও কঠোর মানদণ্ড প্রযোজ্য — পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস-এর এক্সিকিউটিভ ক্যাডারের যোগ্য আধিকারিকদেরই এই দায়িত্বে নিয়োগ করতে হবে, যাঁদের পদ মর্যাদা সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট, সাব-ডিভিশনাল অফিসার বা রুরাল ডেভেলপমেন্ট অফিসার-এর সমতুল্য। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত মানদণ্ড ও প্রোটোকল মেনে স্বচ্ছভাবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই এখন অগ্রাধিকার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন