সমকালীন প্রতিবেদন : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের আগামী মরশুমের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তুঙ্গে। ২০২৬ সালের আইপিএল শুরুর আগে এই বছর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মিনি নিলাম। দীর্ঘ জল্পনার পর সামনে এল সেই নিলামের সম্ভাব্য দিনক্ষণ। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ-এর এক বিশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বসতে পারে আইপিএলের আসন্ন মিনি নিলামের আসর। বিসিসিআই এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দিন ঘোষণা না করলেও, সূত্রের দাবি—এই তিন দিনের উইন্ডোই নিলামের জন্য চূড়ান্ত হতে পারে।
নিলামের আগেই প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিজেদের দলের ধরে রাখা ও ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়দের তালিকা বিসিসিআই-কে জমা দিতে হবে। বিসিসিআই ইতিমধ্যেই তার জন্য ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। অর্থাৎ, নভেম্বরের মধ্যভাগেই স্পষ্ট হয়ে যাবে কোন তারকা কোন দলে থাকছেন আর কাদের নাম নিলামের ঝুলিতে পড়ছে।
গতবারের মিনি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল সৌদি আরবের জেড্ডায়। তার আগের বছর বসেছিল দুবাইয়ে। কিন্তু এবারের আসর ফিরছে ভারতে—এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে বিসিসিআই সূত্রে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি বর্তমানে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত নিলামের নির্দিষ্ট দিন ও ভেন্যু চূড়ান্ত করার জন্য। সম্ভাবনা রয়েছে মুম্বই বা বেঙ্গালুরুতে নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার।
প্রতিটি দলের জন্য নির্ধারিত বাজেট থাকছে ১২০ কোটি টাকা, যা গত মরশুমের মতোই অপরিবর্তিত। তবে এবার প্লেয়ার রিটেনশনে কোনও “ক্যাপিং” থাকছে না—অর্থাৎ, দলগুলি নিজেদের তারকাদের ধরে রাখতে চাইলে খরচে বাধা নেই। প্রত্যেক দল সর্বাধিক ছয়জন ক্রিকেটার ধরে রাখতে পারবে, যার মধ্যে থাকতে পারে পাঁচজন ক্যাপড ও দু’জন আনক্যাপড প্লেয়ার। গতবারের মতোই RTM কার্ড ব্যবহারের সুযোগ থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির হাতে।
গত মরশুমে পয়েন্ট তালিকার একেবারে নিচে শেষ করেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই সুপার কিংস। ফলে এবার বড় রদবদলের সম্ভাবনা প্রবল। সূত্রের খবর, দীপক হুডা, রাহুল ত্রিপাঠি, স্যাম কারান, বিজয় শঙ্কর ও ডেভন কনওয়ে–এর মতো তারকাদের ছেড়ে দিতে পারে চেন্নাই। কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সঞ্জু স্যামসন–কে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে রাজস্থান শিবিরে। তাঁর সঙ্গে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও মহেশ তিকশানা–র নামও রয়েছে সম্ভাব্য রিলিজ তালিকায়।
গতবার ২৩.৭৫ কোটি টাকায় কেনা ভেঙ্কটেশ আইয়ার তেমন ছাপ রাখতে পারেননি। ফলে তাঁকে ছাড়তে পারে কেকেআর। ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন নেতৃত্ব ও ভারসাম্য পুনর্গঠনের দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রবীণ পেসার মহম্মদ শামি–কে রাখা হবে কি না, সেই প্রশ্নে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। দল সূত্রে খবর, তরুণদের জায়গা দিতে সিনিয়রদের বাদ পড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্ক গত মরশুমে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। ফলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। ঋষভ পন্থের চোট-ফিরে আসার প্রভাবেও দিল্লির ব্যাটিং অর্ডারে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। ক্রিকেট দুনিয়ার নজর এখন নিলাম এবং রিটেনশন তালিকা প্রকাশের দিকে। কে থাকবেন, কে বাদ পড়বেন—সেই উত্তেজনা এখন থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে ক্রিকেট মহলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন