Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

বঙ্গে বর্ষার বিদায়, হেমন্তের হাওয়ায় শীতের আমেজ

 

Farewell-to-rainy-season

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌অবশেষে বিদায় নিল বর্ষা। সোমবার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাল, এদিন গোটা বাংলা থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রস্থান সম্পূর্ণ হয়েছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, কর্নাটক, তেলঙ্গানার কিছু অংশ, মেঘালয়ের অধিকাংশ এলাকা, সম্পূর্ণ গোয়া, মধ্যপ্রদেশের অবশিষ্ট অংশ, ছত্তিসগড়ের অধিকাংশ অঞ্চল, বিহারের বাকি অংশ, সম্পূর্ণ ঝাড়খণ্ড, সিকিম এবং ওডিশার কিছু জায়গা থেকেও বিদায় নিয়েছে বর্ষা।

দীর্ঘ আড়াই মাসের সক্রিয় বর্ষার পর এখন রাজ্যে শুষ্ক আবহাওয়া বইছে। উত্তর ও দক্ষিণ—দুই বঙ্গে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। এই সময়ে শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৪ থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকতে পারে।

ভোরবেলায় হালকা শীতল হাওয়া, কমে আসা আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং পরিষ্কার আকাশ—সব মিলিয়ে শহরজুড়ে এখন হেমন্তের ছোঁয়া। আবহবিদদের মতে, “তাপমাত্রা ধীরে ধীরে নামছে, বাতাসে আর্দ্রতা কমছে—শরতের রোদে হেমন্তের ইঙ্গিত স্পষ্ট হলেও এখনই কিন্তু জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা নেই।”

চলতি বছরে বঙ্গোপসাগরে একাধিক ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই টানা বৃষ্টি হয়। উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির মাত্রা ছিল অনেক বেশি। দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে ভূমিধসের ফলে সাময়িক বিপর্যয় তৈরি হয়েছিল। তবে মৌসুমের শেষে বর্ষা বিদায়ের খবর স্বস্তি এনে দিয়েছে কৃষক থেকে সাধারণ নাগরিক—সবাইকে।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে থাকবে মনোরম, রোদেলা আবহাওয়া। কলকাতাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে তাপমাত্রা থাকবে ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রির মধ্যে। রাতের দিকে ও ভোরবেলায় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমবে, হালকা শীতলতা অনুভূত হবে। তবে উপকূলীয় জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে সোমবার সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহবিদদের মতে, কালীপুজো ও দীপাবলির সময় আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। সেসময়ে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে, তবে ভোরবেলায় শীতল আমেজ আরও বাড়বে। অর্থাৎ উৎসবের মরসুমে আবহাওয়া থাকবে আরামদায়ক। উত্তরবঙ্গে, বিশেষ করে দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে আগামী দুই-তিন দিন স্থানীয় মেঘের প্রভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস। অন্যদিকে মালদহ ও দুই দিনাজপুরে শুষ্ক আবহাওয়াই বিরাজ করবে।

বর্ষা এবার নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগেই বিদায় নিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে—শীতও কি আগেভাগেই আসবে বঙ্গে? হাওয়া অফিস বলছে, এখনই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাপমাত্রার ধারাবাহিক পতন শুরু হলেও নভেম্বরের আগে জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে সকাল–সন্ধ্যার হালকা ঠান্ডা ইতিমধ্যেই বাঙালির মনে এনে দিয়েছে শীতের আমেজ।

আবহবিদদের বক্তব্য, এখন যে হেমন্তের সূচনা দেখা যাচ্ছে, সেটি ধীরে ধীরে শীতে রূপ নেবে। তবে তাপমাত্রা বড় রকমের কমতে শুরু করবে অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে। বর্ষা বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের মরসুমে শীতের আগমন–আভাসে উচ্ছ্বসিত শহরবাসী। রোদ, শীতল হাওয়া আর পরিষ্কার আকাশ—সব মিলিয়ে শুরু হল বাঙালির প্রিয় ঋতু হেমন্তের পথচলা।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন