সমকালীন প্রতিবেদন : দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কে শনিবার দুপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মারিশদা থানার সংলগ্ন এলাকায় আচমকা ধসে পড়ল একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজের অংশ। দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ বিকট শব্দে ব্রিজটির একাংশ ভেঙে পড়ে, মুহূর্তের মধ্যেই তৈরি হয় বিশাল গর্ত। ফলে সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায় জেলার অন্যতম ব্যস্ত এই জাতীয় সড়ক, যা দিঘা ও কলকাতার মধ্যে প্রধান সড়ক যোগাযোগের পথ।
ব্রিজ ভেঙে পড়তেই রাস্তার দু’পাশে লম্বা যানজট। আটকে পড়ে একাধিক বাস, লরি, পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি। বিশেষত দিঘাগামী বহু পর্যটকের গাড়ি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে সৌভাগ্যবশত, বড় কোনও প্রাণহানি বা গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান মারিশদা থানার পুলিশকর্মী ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা। বিপজ্জনক অংশে গার্ডরেল বসিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থলে যান কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস।
এদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্রিজটির কাঠামোগত বিশ্লেষণ শুরু করেছেন পূর্ত ও সড়ক পরিবহণ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা। প্রাথমিক অনুমান, ব্রিজটি দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে কোনও সংস্কার বা মেরামতির কাজ হয়নি। তার উপর ভারী ট্রাক ও লরির অবিরাম চলাচলের চাপেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে বলে তাঁদের দাবি।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “মারিশদা থানা এলাকার লোকাল বোর্ডের কাছে জাতীয় সড়ক ১১৬বির একটি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়েছে। ফলে রাস্তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে, সমস্ত যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।”
বর্তমানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোলাঘাট থেকে দিঘাগামী যানবাহনগুলিকে বাজকুল (ভূপতিনগর থানা এলাকা) ও হেনরিয়া (খেজুরি থানা এলাকা) থেকে ঘুরিয়ে এগরা হয়ে দিঘা বা কাঁথি অভিমুখে পাঠানো হচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, ওই গ্রামীণ পথগুলি সরু হওয়ায় ভারী যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
এদিকে, যানজট সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিঘাগামী পর্যটক ও স্থানীয়দের অপ্রয়োজনীয় ভিড় এড়ানোর জন্যও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ব্রিজটির বয়স ও নির্মাণ সংক্রান্ত নথি যাচাই করা হচ্ছে।
ঠিক কোন কারণে সেতুটি ভেঙে পড়ল — তা জানতে পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞ দল কাঠামোগত পর্যালোচনা শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত ওই রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন