সমকালীন প্রতিবেদন : বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপের উপর নিম্নচাপ! একের পর এক আবহাওয়া সিস্টেম তৈরি হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের আকাশে ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঘনীভূত হয়ে শনিবারের মধ্যে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। রবিবার তার গভীর নিম্নচাপের রূপ নেবার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর সোমবারের মধ্যে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। তবে তার গতিপথ ও শক্তি নির্দিষ্ট ভাবে জানানো যাবে সিস্টেমটি সম্পূর্ণভাবে গঠিত হওয়ার পরেই। এর প্রভাবে সমুদ্রে ঝোড়ো হাওয়া বইবে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে। রবিবার রাত থেকে সোমবারের মধ্যে তা ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পরবর্তী কয়েক দিন সেই গতিবেগ আরও বেড়ে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা।
ফলে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে হাওয়া অফিস। যাঁরা ইতিমধ্যে গিয়েছেন, তাঁদের ২৭ তারিখের মধ্যে ফিরতে বলা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে সপ্তাহান্তে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হবে। শনিবার থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার এবং সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায়।
মঙ্গলবার, অর্থাৎ ছট পুজোর দিন, দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলাতেই মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতাতেও সোমবার রাত থেকেই আকাশে মেঘ জমবে, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে সোমবার ও মঙ্গলবার। মঙ্গলবার ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও ঝাড়গ্রামে। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও হাওড়ায়। বৃহস্পতিবার সেই বৃষ্টির দাপট ছড়াবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানেও।
উত্তরবঙ্গে শুক্রবার থেকেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে উইকেন্ডে বৃষ্টি বাড়তে পারে। দার্জিলিং ও কালিম্পং-এর পাহাড়ি এলাকায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও শনিবার ও রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারেও। বুধবার জলপাইগুড়ির কিছু অংশে এবং বৃহস্পতিবার মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে উপকূলবর্তী রাজ্যগুলি— বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায়— সতর্কতা জারি থাকবে। ছট ও জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় দক্ষিণবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। মেঘলা আকাশ, বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়া পুজোর আমেজে খানিক ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলেই মনে করছেন আবহবিদরা।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন