সমকালীন প্রতিবেদন : প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্ণ করল বনগাঁ মহকুমার গোপালনগর চক্রের অন্তর্গত বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই রজত জয়ন্তী বর্ষে বিদ্যালয়ে উৎসবের আবহ ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রাক্তনীদের পুনর্মিলনের পাশাপাশি এই উপলক্ষে উদ্বোধন করা হল স্মার্ট ক্লাসরুম, যা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার পথে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
প্রত্যন্ত গ্রাম বর্দ্ধনবেড়িয়াতে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি ২৫ বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুল গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় এক ব্যক্তি নিজের জমিও দান করেন। আর তারপর শুরু হয় পথচলা। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এবার আরও সমৃদ্ধ হল শিক্ষা পরিবেশ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত বক্সী জানান, "রজত জয়ন্তী উপলক্ষে আমাদের বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পুনর্মিলন উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং স্মার্ট ক্লাসরুমের উদ্বোধন—এই তিনটি বিষয় ছিল বিশেষ আকর্ষণ।" তিনি আরও বলেন, "আমরা চাই, গ্রামের ছেলেমেয়েরাও আধুনিক শিক্ষায় পিছিয়ে না পড়ুক।"
স্মার্ট ক্লাসরুমের উদ্বোধন করেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি দেবব্রত সরকার। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "বিভূতিভূষণের স্মৃতিধন্য এই বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা পাবে, যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যেই জেলার বহু স্কুলে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।"
দুই দিনব্যাপী রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ছিল প্রভাতফেরি, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান, নাটক, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিদ্যালয়ের জমিদাতা ব্যক্তিত্বের আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন এবং বিদ্যালয়ের নিজস্ব পত্রিকা ‘মেঘমল্লার’-এর প্রকাশ। অনুষ্ঠানের শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রছাত্রী এবং গ্রামবাসীদের মিলিত চেষ্টায় এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে একটি স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক অধ্যায়। এই উদ্যাপন শুধু এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৫ বছরের পথচলার গর্ব নয়, বরং গোটা অঞ্চলের শিক্ষা সংস্কৃতির উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন