সমকালীন প্রতিবেদন : নতুন ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধছে বঙ্গোপসাগরে। আর এই ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বাড়িয়ে আগামী সপ্তাহে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি সেই রকম হয়, তাহলে তা গভীর ও অতি গভীর নিম্নচাপের পর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যদিও তা স্পষ্ট হবে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে কিনা তার উপর।
গত কয়েক দিন ধরেই অস্বস্তিকর গরমে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গবাসী। অস্বস্তিকর গরমে পুড়ছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। স্বস্তি মিলছে না রাতের দিকেও। দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া তুলনায় অনেকটাই মনোরম। সেখানে বৃষ্টিপাতের কারণে স্বস্তি মিলছে।
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে একটু বেলা হতেই পথে বেরোনো কষ্টকর হয়ে পড়ছে। আর এই পরিবেশে বেশিক্ষণ থাকলে চোখ মুখে জ্বালা ধরে যাচ্ছে। ঘরে থাকলেও স্বস্তি মিলছে না। কারণ, পাখার হাওয়া গরম, খাবার জল, ট্যাংকের জল হাত মুখ পুড়িয়ে দিচ্ছে। রাতের দিকে মেঘলা আকাশের কারণে পরিস্থিতি আরো গুমোট হয়ে থাকছে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বা কোথাও আরও কিছুটা বেশি থাকছে। দিনের গড় তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি থাকছে। যার কারণে রাতেও অস্বস্তি বজায় থাকছে। গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তি আরো বেশি করে অনুভূত হচ্ছে।
হাওয়া অফিসের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে এমন পরিস্থিতি চলবে। যদিও তার মধ্যে বুধ এবং বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আর তাতে স্বস্তি মিলবে। পাশাপাশি, পশ্চিমের কিছু জেলায় তাপপ্রবাহ চলতে পারে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আন্দামানে বর্ষা শুরু হতে চলেছে বুধবার। সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় দানা বাঁধে। এক্ষেত্রে এই সপ্তাহের শেষ দিকে বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন ঘূর্ণাবর্ত দানা বাধার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে তা শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কিনা, তা পরবর্তী পরিস্থিতি অনুযায়ী বোঝা যাবে।
এই ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে বাংলাদেশ আবহাওয়া দপ্তরের খবর, আগামী ২৩ মে থেকে ২৮ মে এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় দানা বাধার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আর এই ঘূর্ণিঝড় দানা বাঁধলে সেটি ভারতের উড়িষ্যা এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্যে কোন একটি জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের খুলনাতে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সবটাই নির্ভর করবে ঘূর্ণাবর্তটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে কিনা তার উপরে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গল এবং বুধবার দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম জেলায় তাপপ্রবাহ চলার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে আদ্রতাজনিত কারণে অস্বস্তিকর গরম অনুভূত হবে। পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও এই জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহ চলতে পারে। তবে মঙ্গলবার এবং বুধবার দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা সহ নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সঙ্গে ঝড়ের সম্ভাবনাও রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন