সমকালীন প্রতিবেদন : মহাকাশ আর পৃথিবী এক হয়ে গেল। আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ বার সূর্যাস্ত দেখে ফেলেছেন শুভাংশু। সেই অভিজ্ঞতা পৌঁছল পৃথিবীতে। স্পেশ স্টেশনে পৌঁছানোর পর শুভাংশুর সঙ্গে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘গাজরের হালুয়া বাকিদের খাইয়েছেন?’ ভিডিয়ো কলে শুভাংশুকে প্রশ্ন মোদির!
স্পেস স্টেশনে যাওয়া প্রথম ভারতীয় অ্যাস্ট্রোনট শুভাংশুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথপোকথন ভাইরাল। আগামীদিনে ভারতের মহাকাশ গবেষণা নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। কোথায় যেতে চলেছে ভারত? মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ভারতের ভবিষ্যৎ কি? কত দূরই বা এগোল গবেষণার কাজ?
গর্বে ভারতের বুকের ছাতি ছত্রিশ। গত বৃহস্পতিবার ইতিহাস তৈরি করেছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা। প্রথম ভারতীয় হিসাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা দিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ইতিমধ্যেই অনেকটা সময় কাটিয়েও ফেলেছেন দেশের গর্ব নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা। শনিবার তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুভাংশুকে প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বিশেষ বার্তা। বলেছেন 'ভারত থেকে দূরে কিন্তু ভারতীয়দের হৃদয়ে রয়েছেন আপনি'। পাল্টা মাতৃভূমির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন।
তবে কথোপকথন এতটুকু নয়। মোদি এদিন প্রশ্ন করেছিলেন, 'আপনি তো গাজরের হালুয়া নিয়ে গেছেন মহাকাশে। সবাইকে খাওয়ালেন?' শুক্লা উত্তরে জানান, 'আমি গাজরের হালুয়া, মুগ ডালের হালুয়া ও আমরাস নিয়ে এসেছিলাম, সবাই একসঙ্গে খেয়েছে। সবাই খুব পছন্দ করেছে।' তবে এসবের থেকেও বেশি আগ্রহের যে পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে কথোপকথনের শেষ দিকে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল "মিশন গগনযান"।
এদিন শুভাংশু শুক্লার হাতে হোমওয়ার্ক তুলে দিয়ে মোদি বলেন, ভারতকে অবশ্যই মিশন গগনযান নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করতে হবে। একজন ভারতীয় মহাকাশচারীর চাঁদে অবতরণ অর্জন করতে হবে। একইসঙ্গে জোর দিয়ে বলেন, শুভাংশু শুক্লার মহাকাশে অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের এই অভিযানের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হবে।
এরপর শুক্লা নিশ্চিত করে বলেন তাঁর প্রশিক্ষণ এবং বর্তমান মিশন জুড়ে যা কিছু তিনি শিখছেন, দেখছেন সেই অভিজ্ঞতা ভারতের আসন্ন মহাকাশ অভিযানের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হবে। পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে বলেন, তিনি ফিরে আসার পর, আসন্ন মিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে অর্জন করা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সেটাকে সফল করার চেষ্টা করবেন। এটাও জানাতে ভোলেননি যে, চলতি মিশনে তাঁর আন্তর্জাতিক সহকর্মীরা গগনযানে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। যা তিনি উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করেন। উত্তরে তিনি আশাবাদী হয়ে তাঁদের বলেছেন, "খুব শীঘ্রই।"
তবে শুধু আসন্ন মিশন নিয়েই আলোচনা নয়, এদিন মোদী আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছিলেন শুভাংশুকে। মোদি জানতে চান, মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে প্রথমবার দেখে শুভাংশুর কেমন অনুভূতি হয়েছিল। উত্তরে শুক্লা বলেন, “পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখে মনে হয়েছে, পৃথিবী আসলে একটি একক সত্তা। এখানে কোনো সীমানা নেই।" আর ভারতকে? মহাকাশ থেকে দেখে শুক্লা জানান, “ভারত অনেক বড় দেখায়। মানচিত্রে যেমন দেখি, বাস্তবে তা আরও বিশাল। তখনই মনে হয়েছে, পৃথিবী আসলে একটাই দেশ, আর আমরা সবাই সেই একই পরিবারের অংশ।”
উল্লেখ্য, যে অ্যাক্সিয়ম ৪ মিশনে শুভাংশুরা গিয়েছেন। এখানে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ১৪ দিন ধরে ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হবে, যার মধ্যে ৭টি ভারতের বিজ্ঞানীদের প্রস্তাবিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন