সমকালীন প্রতিবেদন : রোহিত শর্মা পারেননি। পারলেন অভিষেক শর্মা। কোচ গৌতম গম্ভীরের মুখে হাসি ফোটালেন পঞ্জাবের শর্মা। ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে আগ্রাসী ইনিংস আগেও খেলেছেন। তবু বুধবার ইডেন গার্ডেন্সে অভিষেকের ৩৪ বলে ৭৯ রানের ইনিংস মুগ্ধ করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। ৫টি চার এবং ৮টি ছয়ের সাহায্যে খেলা ইনিংসে সামান্যতম স্বস্তি নিতে দিলেন না ইংল্যান্ডের বোলারদের।
ইডেনে অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর পরিচিত ভঙ্গিতে হাতের মুদ্রায় ‘এল’ অক্ষর তৈরি করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন অভিষেক। শুভমন গিলের সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন অভিষেক। সে সময় বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন। ব্যাট করতেন মিডল অর্ডারে। আইপিএল দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাঁর ব্যাটিংয়ের উপর আস্থা রেখেছিল।
উপরের দিকে ব্যাট করানো হত তাঁকে। পরে ওপেনও করানো হয়। ধীরে ধীরে তার ফল পেতেও শুরু করে হায়দরাবাদ। তবুও যেন তাঁর ব্যাটিংয়ে খামতি থেকে গিয়েছিল। যা মেরামত করেন যুবরাজ সিংহ। এক সময় যুবরাজের অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করতেন অভিষেক। ছোটবেলার কোচ তাঁর বাবা রাজকুমার শর্মাই।
দ্বিতীয় কোচ মনোজ কালরা। বর্তমানে যুবরাজের অ্যাকাডেমির অন্যতম কোচ। যুবরাজ তাঁর ব্যাটিং স্টান্স বদল করে দেন। যুবরাজের নির্দেশ ছিল, ১০০ মিটারের বাউন্ডারি পার করতে পারলে ছয় রান ধরা হবে। না হলে আউট। প্রথম দিকে অভিষেকের হাতে বেশি জোর ছিল না। হেভিওয়েট ট্রেনিং করতে হয়। শরীরের ওজনও বাড়াতে হয়। যুবরাজের ছোঁয়ায় অভিষেক ক্রমে তাঁর মতোই আগ্রাসী ব্যাটার হয়ে উঠেছেন।
ইডেনে বুধবার মারা আটটি ছক্কার মধ্যেও রয়েছে যুবরাজের নির্দেশ মেনে চলার নিদর্শন। ব্যাট-বলে ঠিকমতো না হলেও বল উড়ে গিয়েছে গ্যালারিতে। কীভাবে এমন ভয়ডরহীন ব্যাটিং করতে পারেন? ম্যাচের পর অভিষেক বলেছেন, ‘‘কোচ গৌতম গম্ভীর এবং অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। নিজেদের মতো করে খেলার অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমাদের কাজটাও সহজ হয়েছে। প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম নিজের দক্ষতা। সেটা করতে পেরেছি। বেশি ভাল লাগছে দলকে জেতাতে পেরে।’’
অভিষেক আরও বলেছেন, ‘‘অধিনায়ক ফলাফল নিয়ে ভাবতে বারণ করলে, একজন নতুন ক্রিকেটারের কাছে সেটা একটা বড় পাওয়া। আমি সেই সুযোগ পেয়েছি। তাই যেভাবে খেলতে চাই, সেভাবে খেলতে পারছি।’’ তবে অভিষেকের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার নেপথ্যে অবদান রয়েছে ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রাহুল দ্রাবিড়েরও। অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলে অভিষেক কোচ হিসাবে পেয়েছিলেন দ্রাবিড়কে। সে সময় হাতে ধরে অভিষেকের টেকনিক মজবুত করে দিয়েছিলেন দ্রাবিড়। যুবরাজ যোগ করেছেন আগ্রাসী মেজাজ। গম্ভীর সুফল পাচ্ছেন। এগিয়ে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন