সমকালীন প্রতিবেদন : স্কুল শিক্ষকদের বিষয়ে নতুন করে নড়েচড়ে বসল আদালত। প্রথমটায় প্রায় ২৬ হাজার স্কুল শিক্ষক–শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করে বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর, এবার স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন করার বিষয়ে বড় পদক্ষেপ নিল আদালত।
স্কুল শিক্ষকদের একটা বড় অংশ রমরমিয়ে প্রাইভেট টিউশন করছেন, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছিল। আর এবার সেই মামলার রায় দিল হাইকোর্ট।
বহুবার অভিযোগ উঠেছে, স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার কথা বলা হলেও, তাঁরা নম্বর কম দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে তাঁদের কাছে পড়তে যাওয়ার জন্য বাধ্য করছে।
এই অবস্থায় আদালত বেশ কিছুদিন আগে স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন করানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে বাস্তবে রীতিমত আদালতের দেওয়া সেই নির্দেশকে অবলীলায় অবমামনা করে তাঁরা নিজেদের কাজ করে চলেছেন।
২০১৮ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছিল, কোন স্কুল শিক্ষক বা শিক্ষিকা কোনরকম প্রাইভেট টিউশন করতে পারবেন না। আর যদি কেউ করেন, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই গণ্য করা হবে।
এর পাশাপাশি আদালতের নির্দেশনামার পরেও আদালতের সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অনেক শিক্ষকই এখনও পর্যন্ত প্রাইভেটে টিউশন করে চলেছেন বলেই অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে নতুন করে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য প্রাইভেট টিউটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
এই ঘটনার পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শককে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে, বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কার করে নির্দেশ জারি করেছে।
সেই নির্দেশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০১৮ সালে শিক্ষকদের জন্য তৈরি করা বিধি অনুযায়ী, সরকারি শিক্ষকেরা প্রাইভেট টিউশন করতে পারবেন না। আর যদি করেন, তাহলে সেই বিষয়ে কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
রাজ্য প্রাইভেট টিউটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের করা অভিযোগের বিষয় সম্পর্কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে আইনজীবী কোয়েলি ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ন'টি জেলার ডিআই এই ব্যাপারে রিপোর্ট দিয়েছেন যে, শিক্ষকরা কোনরকম প্রাইভেট টিউশন করেন না।
এমনকি গত বছর ১ মে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশমত, স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনির ছবিসহ প্রমাণ দেওয়ার কথা বলা হলেও, আইনজীবী এক্রামুল বারি অভিযোগ করেন, এই বিষয়ে শিক্ষা দফতর কোন গুরুত্বই দেয়নি। যার কারণেই, এই বিষয়ে কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনকে এবার মাঠে নামতেই হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন