Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২

জয়নগরের মোয়ার মেয়াদ বাড়াতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ‌

 

Moa-of-Jayanagar

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌‌দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মোয়ার প্রসিদ্ধি এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে এই মোয়ার কারবারে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে। কমে যাচ্ছে খেঁজুর গাছের সংখ্যা, মিলছে না সেই গুড়, খই। দক্ষ শ্রমিক পাওয়াও সমস্যার। ফলে পুরনোদের অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন এই কারবারে।

সীতাভোগ, মিহিদানার নাম শুনলেই যেমন বর্ধমানের কথা চলে আসে, তেমনই শীতের জয়নগরের মোয়া মানেই ‌দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের কথা উঠে আসে। শীতের এই অসাধারণ মিষ্টান্নদ্রব্যের অন্যতম প্রধান উপকরণ হল কনকচূড় ধানের খই এবং নলেন গুড়।

‌দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর সহ আশপাশ এলাকায় শীতকালে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে, তার থেকে সুস্বাদু ঝোলা গুড় তৈরি করা হয়। আর সেই গুড়ের সঙ্গে কনকচূড় খই এবং কাজু, কিসমিস, খোয়া খির, ঘি, এলাচ গুড়ো ইত্যাদি সহযোগে তৈরি হয় জয়নগরের মোয়া।

১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে জয়নগরের দুই মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বন্ধু প্রথম এই মোয়া তৈরির কারবার শুরু করেন। সময় যত এগোয়, এই মোয়ার প্রসিদ্ধিও বাড়তে থাকে। এখন জয়নগরের মোয়ার নামে ‌দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাইরেও বিভিন্ন জেলায় এই মোয়া তৈরি হচ্ছে। যদিও স্বাদে, গন্ধে তা আলাদা।

বর্তমানে খেঁজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং গাছ কাটার কাজে যুক্ত শিউলিরা নতুন করে এই পেশায় আসতে না চাওয়ায় আসল নলেন গুড় জোগাড় করাও মুসকিল হয়ে পরছে। অন্যদিকে, কনকচূড় ধানের চাষও অনেক কমে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পরছে এই কারবারে। 

এই রকম একটি পরিস্থিতিতে এই কারবারে উৎসাহ জোগাতে জয়নগরের মজিলপুরে শুরু হয়েছে ৩ দিনের মোয়া উৎসব। সেখানে বিভিন্ন সংস্থা তাদের নিজেদের তৈরি জয়নগরের মোয়া, নলেন গুড়ের পাটালি, গুড়ের তৈরি অন্যান্য মিষ্টান্ন সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছে। উৎসবে এই মোয়ার মান এবং উৎপাদন বজায় রাখার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। 

জয়নগরের মোয়ার নামে কিছু অসাধু কারবারী নিম্নমানের মোয়া তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেইসব কারবারীদের সতর্ক করে স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস এব্যাপারে জানালেন, জয়নগরের মোয়ার গুণমান, প্রসিদ্ধি যাতে বজায় থাকে, তার দিকে নজর দিতে হবে।

শুধু এই রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বিদেশেও এই মোয়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই এই মোয়া বর্তমানে অনলাইনেও পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, যারা ডায়বেটিস রোগে আক্রান্ত, তাঁদের কথা মাথায় রেখে নো অ্যাডেড সুগার মোয়াও মিলছে। 

এতোদিন এই মোয়া ৩ থেকে ৪ দিন ভালো থাকতো। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই মোয়াকে ১৫ দিন পর্যন্ত ভালো রেখে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে দূরদেশে এই মোয়া পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে এখন আর সমস্যা নেই। মোয়া উৎসবের মাধ্যমে এমনই অনেক নতুন তথ্য উঠে এলো।







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন