সমকালীন প্রতিবেদন : দেবীমূর্তির বদলে এখানে অস্ত্রকে দেবীরূপে পুজো করা হয়। মূর্তির স্থলে থাকে তরোয়াল, বল্লম, তীরধনুক, ঢাল এবং প্রাচীন পুঁথি। অভিনব এই প্রাচীন পুজোর আয়োজন হয় পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি ব্লকের আটনা গ্রামে।
ঝাড়খন্ড লাগোয়া তুন্তুরী সুইসা গ্রাম পঞ্চায়েতের আটনা গ্রামেই বসবাস একসময়কার জমিদার মাহাতোদের বর্তমান বংশধরদের। এই পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জমির দখলকে কেন্দ্র করে একসময় এই বংশের সদস্য ধনিরাম মাহাতোর সঙ্গে মানকি সম্প্রদায়ের যুদ্ধ বাধে।
অবশেষে সেই যুদ্ধে জয়লাভ করেন ধনিরাম মাহাতো। যুদ্ধে সেসব অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল, যুদ্ধজয়ের পর সেই অস্ত্রগুলিকেই দেবীদুর্গা রূপে পুজোর প্রচলন শুরু হয়। ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো সেই রীতি এখনও বয়ে চলেছেন এই বংশের বর্তমান সদস্যরা।
এই বংশের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, সেইসময়কার যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রে বিরাজ করেন দেবী দুর্গা। দশভূজা দেবী দুর্গা সেই যুদ্ধের জয়ের প্রতীক। আর সেই বিশ্বাস থেকে মূর্তি পুজোর বদলে এই বংশের সদস্যরা অস্ত্রকেই দেবীরূপে পুজো করেন।
মাদুর্গার পুজোয় যে ধরনের নিয়ম মেনে পুজো করা হয়, এখানেও সেই নিয়ম মেনেই পুজিত হন দেবী। সন্ধিপূজোয় পাঠাবলির রেওয়াজ রয়েছে। শক্তির প্রতিক হিসেবে আয়োজন হওয়া প্রাচীন এই পুজোয় গ্রামের ব্রাহ্মণ, নাপিত এবং ঢাকিরাও অংশ নেন।
বংশানুক্রমিকভাবে তিন মাহাতো পরিবার এই পুজো চালিয়ে আসছেন। পুরনো ঐতিহ্য মেনে মায়ের আরাধনা করা হয়। পারিবারিক এই জমিদারের পুজোয় মেতে উঠেন গোটা গ্রামের মানুষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন