সমকালীন প্রতিবেদন : বনগাঁ উচ্চবিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এবার সরব হল বনগাঁ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রাইভেট টিউশন পড়তে আসা বনগাঁ হাইস্কুলের ছাত্ররা যে শিক্ষকের সামনে স্কুলের পড়াশোনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধেই এবার প্রতিবাদে সরব হল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বনগাঁর কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক সুমন দে নিজের মতিগঞ্জের বাড়িতে বনগাঁ হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণীর বেশ কিছু ছাত্রকে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে এই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতে গিয়েছিলেন গৃহশিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা।
সেখানে প্রাইভেট টিউশন পড়তে আসা বনগাঁ হাইস্কুলের ছাত্ররা শিক্ষক সুমন দে–র সামনেই গৃহশিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদের জানায়, বনগাঁ হাইস্কুলে পড়াশোনা হয় না, তাই তারা প্রাইভেট টিউশন পড়তে এসেছে। স্কুল শিক্ষকের সামনে এই মারাত্মক অভিযোগ তোলার পরেও এব্যাপারে শিক্ষক সুমন দে কোনও প্রতিবাদ না করায় ক্ষুব্ধ বনগাঁ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ।
গোটা বিষয়টি মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। সংবাদ মাধ্যমে তা প্রচারিত হবার পর নিন্দার ঝড় ওঠে। এব্যাপারে বনগাঁ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কুনাল দে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, বনগাঁ হাইস্কুলে পড়াশোনা না হলে, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে এতো ভালো রেজাল্ট হয় কি করে ? পড়াশোনা না হলে এতো ছাত্র ভর্তি হয় কেন ? যে স্কুলের শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করার কথা নিজেমুখে স্বীকার করেছেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের যেসব স্কুলশিক্ষক গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এফআইআর করার ক্ষমতা দেওয়ার ব্যাপারে নতুন নির্দেশিকা ঘোষনা করেছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। সেদিন ক্যামেরার সামনেই প্রাইভেট টিউশন করার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন শিক্ষক সুমন দে।
তারপরেও এব্যাপারে কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিয়েছেন কী, সেব্যাপারে কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক দেবরাজ সরকার জানান, প্রাইভেট টিউশন করছেন না, এইমর্মে নতুন করে স্ট্যাম্প পেপারে মুচলেকা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই স্কুলের সমস্ত শিক্ষক–শিক্ষিকার উদ্দেশ্যে নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
আর শিক্ষক সুমন দে–র ব্যাপারে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। প্রাইভেট টিউশন বন্ধের ব্যাপারে সরকার কড়া ব্যবস্থাগ্রহনের কথা ঘোষনা করলেও সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির এব্যাপারে সরকারকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে কতটা সদিচ্ছা আছে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন