Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১

বনগাঁর দুর্গাপুজোর সেকাল–একাল ২

 

Once-upon-a-time-in-Durga-Puja-of-Bangaon-2

বনগাঁর দুর্গাপুজোর সেকাল–একাল- ২

পীযূষ হালদার

বনগাঁ শহরে প্রথম দুর্গাপুজো হয় দত্তপাড়ার দত্ত বাড়িতে। সূর্যনারায়ণ দত্ত যশোরের রাজা সীতারাম রায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে সীতারাম মুঘল বাহিনীর হাতে পরাজিত হলে সূর্যনারায়ণ যশোর থেকে বনগাঁর দত্তপাড়ায় এসে বাড়ি নির্মাণ করেন। তাঁর পৌত্র স্বরূপ নারায়াণ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে দত্ত বাড়িতে দুর্গা পুজোর প্রচলন করেন। 


সেই সময় বনগাঁর মানুষের কাছে আনন্দ উৎসবের একমাত্র উৎস ছিল এই পুজো। পুজো মণ্ডপের সামনে মাঠে সাতদিন ধরে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এই তিনদিনই এই মাঠেই প্রসাদ বিতরণ করা হতো এলাকার মানুষের মধ্যে। দত্ত বাড়ির পুজোমন্ডপ এখন ভগ্নপ্রায়।  এলাকার সাধারণ মানুষ প্রাচীন এই দুর্গাপুজোকে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছেন। 


অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে কলকাতার উল্টোডাঙার কাছে বাগখাল কাটার সময় যুধিষ্ঠির সিংহ ও তাঁর পরিবার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে বনগাঁর যশোর রোডের ধারে মুস্তাফিপাড়াতে বাড়ি তৈরি করেন। এই পরিবারের পুরনো ঐতিহ্য পারিবারিক দুর্গাপুজো। সেইমতো ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে গোপালচন্দ্র ও বরদাকান্ত সিংহের উদ্যোগে শুরু হয় দুর্গাপুজো। প্রথম মাটির তৈরি চালাঘরে পরে পাকা মন্ডপ নির্মাণ করে দুর্গাপুজো শুরু হয়।  


বর্গী আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য দেড়শ বছর আগে বর্ধমান জেলার বৈঁচি থেকে কৃষ্ণচন্দ্র দাঁ তাঁর পরিবার নিয়ে চলে আসেন উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে। ভিটে ছেড়ে এলেও পরম্পরা বজায় রাখতে গোপালনগরে বাসগৃহের পাশাপাশি পুজোমণ্ডপ নির্মাণ করে দুর্গাপুজো শুরু করেন। 


কথিত আছে, ধনপতি পুত্র শ্রীমন্ত বাণিজ্য করার পথে ঝড়ে মাঝ সমুদ্রে জলে ডুবে যাচ্ছিলেন। সেই সময় মা দুর্গা তার হাত ধরে তুলে রক্ষা করেন। দেবী সেই কমলে কামিনী রূপে এই পরিবারে পূজিত হন। চন্ডীমঙ্গল কাব্যের ধনপতি সওদাগরের পুত্র শ্রীমন্তকে মা মঙ্গলচণ্ডী যেভাবে উদ্ধার করেছিলেন, তারই প্রতিমূর্তি। 


পরবর্তীতে ব্যবসায়িক সূত্রে কৃষ্ণচন্দ্র দাঁ-এর পঞ্চম বংশধর অজিত কুমার দাঁ  বনগাঁর ‘ট’ বাজারে চলে এসে বসতি গড়ে তোলেন। ১৯৭১ সালে তিনিও এই বাড়িতে কমলে কামিনী রূপে মাদুর্গার পুজো শুরু করেন। পুজোয় ধুনো পোড়ানো এই বাড়ির একটি বিশেষত্ব। এই পরিবারের বনগাঁর বাড়ির পুজো এবারে ৫০ বছরে পা দিল। প্রথম থেকেই একই সঙ্গে এই বাড়িতে কুমারী পুজোরও প্রচলন হয়।  








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন