Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১

হুংচুরা তেরেসা দ্বীপের বাসিন্দা

 

Hunchura-is-a-resident-of-Teresa-Island

হুংচুরা তেরেসা দ্বীপের বাসিন্দা 

(‌প্রথম পর্ব)‌

     অজয় মজুমদার 

পোর্টব্লেয়ার থেকে দু'দিন, দু'রাত জাহাজ গেলে তবেই তেরেসা দ্বীপে পৌঁছানো যায় ৷ আর এই দ্বীপেই বসবাস করে হুংচু নামের এক আদিবাসী গোষ্ঠী ৷ বৃষ্টির জলই যাদের প্রধান পানীয় ৷ পোর্টব্লেয়ার থেকে তেরেসা দ্বীপে যাওয়ার সময় মালপত্র নামানোর জন্য নিকোবর দ্বীপে একদিন দাঁড় করিয়ে রাখে জাহাজটিকে ৷ নিকোবর কথাটি এসেছে নেক (nake) অর্থাৎ উলঙ্গদের বাসভূমি ন্যাক্কোবর থেকে ৷ ধীরে ধীরে এই শব্দটি সরলরূপ প্রকাশ পেয়ে নিকোবর হয়েছে। 

আন্দামান গ্রুপের দক্ষিনে ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে আট ঘন্টার জলপথে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সদর দপ্তর কার নিকোবর ৷ ২৮ টি দ্বীপ নিয়ে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ৷ তেরেসা নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্ভুক্ত ৷ তেরেসা দ্বীপে হুংচু ছাড়াও তেলেগু ভাষার কিছু মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করেন ৷ এই দ্বীপের মানুষের স্বচ্ছন্দে বসবাসের জন্য কিছু শ্রমিক বাইরে থেকে আমদানি করা হয় ৷ 

‌(আরও পড়ুন :‌ গ্রহানুর সন্ধানে বর্ধমানের তিন কলেজ পড়ুয়া, প্রশংসা নাসার)

শ্রমিকদের দিয়ে কাঠের কাজ, টিনের কাজ প্রভৃতি করিয়ে নেওয়া হয় ৷ বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য বড় বড় পাত্র তৈরি করা হয় ৷ কারণ, বৃষ্টির জলই হুংচু জীবনে পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয় ৷ হুংচুরা শুধু তেরেসা দ্বীপেই থাকেন তা নয়, ওরা এখন অন্যান্য দ্বীপেও ছড়িয়ে পড়েছেন ৷ আমরা সেইসব দ্বীপ নিয়ে অল্প বিস্তর আলোচনা করব ৷ 

পিলোপাঞ্জা দ্বীপে কিছু মঙ্গোলিয়ান হুংচু থাকেন ৷ এঁরা নেপালিদের মতো ৷ এঁদের পূর্বপুরুষ একদিন শ্রমিক হিসাবে অথবা নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কোনও একটা দ্বীপে এসেছিলেন ৷ ছিন্নমূল হুংচু শ্রমিক আর ফিরতে পারেননি ৷ এখানেই সবকিছু নতুনভাবে গড়ে উঠেছে ৷ পূর্বের সংস্কৃতির সঙ্গে হুংচু জীবনের আর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ পিলোপাঞ্জা দ্বীপ থেকে জলপথে দু'ঘণ্টা এগিয়ে পড়ে পিলোবাদ্বীপ ৷ এই দ্বীপে ২৫ থেকে ২৬ টি হুংচু পরিবার থাকে৷ 

হুংচুদের নিজস্ব ভাষা আছে ৷ এছাড়াও কেউ কেউ হিন্দিতে কথা বলতে পারে‌ন ৷ হুংচুদের প্রধান খাদ্য হলো মাছ পোড়া, শুকর, কুকুরের মাংস ৷ এঁদের খাওয়ার ব্যাপারে কোনও বাছ–বিচার নেই ৷ যখন যে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারেন, তা খেয়েই দিন গুজরান তাঁদের। খাওয়ার ব্যাপারে সারা পৃথিবী জুড়ে কেউই মৌলিকত্বের দাবি রাখতে পারেননা ৷ কারণ, যার যেটা ভালো খাবার, সেটা তৈরি করার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে ৷ কিছু বাঙালি শ্রমিক সেখানে কাজে গেছেন ৷ বাঙালি খানা তাঁদের কাছ থেকেই হুংচুরা তৈরি করা শিখেছেন ৷ এঁদের কাছে সেই খাবারগুলি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ৷ 

গোবিন্দ মজুমদার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর মানুষ। রেকন কোম্পানির ডাকে নিকোবর এর বিভিন্ন দ্বীপে কাজ করতে গেছেন ৷ গোবিন্দ মূলত কাঠমিস্ত্রি । সুনামির পর নিকোবর এর বিভিন্ন দ্বীপে ঘরবাড়ি ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৷ সেগুলি পুনরায় তৈরি করে দিচ্ছে রেকন কোম্পানি সহ নানা কোম্পানি। সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগে ৷ বর্তমানে বেশিরভাগ হুংচুই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বি ৷‌.....(‌চলবে)‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন