Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১

উত্তর ২৪ পরগনা : জেলা কমিটি‌ ভেঙে একাধিক সাংগঠনিক জেলা করার ভাবনা তৃণমূলের

 

The idea of ​​multiple organizational districts is grassroots

সমকালীন প্রতিবেদন : পুরসভা, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দলকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কমিটি‌কে ভেঙে একাধিক সাংগঠনিক জেলা করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে আলোচনা অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং দলের বর্তমান সাংগঠনিক প্রধান অভিষেক ব্যানার্জি দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার পরই এই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৩৩ টি। আর এই গোটা এলাকার সাংগঠনিকভাবে দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন রাজ্যের বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইতিমধ্যেই দলের পক্ষ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো ঘোষণা করেছেন যে, একই ব্যক্তি একই সঙ্গে একাধিক পদে থাকতে পারবেন না। সেই অনুযায়ী রাজ্যের একাধিক জেলার দলীয় সভাপতির পাশাপাশি রাজ্যের অনেক মন্ত্রীকেও একাধিক পদ ছাড়তে হবে। স্বাভাবিকভাবেই নবগঠিত সাংগঠনিক জেলাগুলির দায়িত্বে নতুন একাধিক জনকে আনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে, দলের বর্তমান জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে তাঁর দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে তাঁকে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

দলের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সংগঠনকে আরও মজবুত করতে জেলাকে তিনটি বা চারটি অংশে ভাগ করে আলাদা আলাদা সাংগঠনিক জেলা তৈরি করা হতে পারে। জেলার ৩৩ টি বিধানসভা এলাকাকে সেখানে ভাগ করে আলাদা আলাদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে দলের জেলা স্তরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। ইতিমধ্যেই এই দায়িত্ব পাওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে রয়েছেন বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, নারায়ন গোস্বামীর মতো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

শোনা যাচ্ছে, বারাসত–বসিরহাটকে নিয়ে একটি, দমদম–ব্যারাকপুরকে নিয়ে একটি এবং বনগাঁকে নিয়ে আলাদা একটি সাংগঠনিক জেলা তৈরি করা হতে পারে। অন্য একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত এবং ব্যারাকপুর– এই চারটি আলাদা সাংগঠনিক জেলা গঠন করা হতে পারে। জেলার ৩৩ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ২৯ টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল। যে চারটি আসনে তৃণমূলের পরাজয় হয়েছে, সেই চারটি আসনই বনগাঁ মহকুমা এলাকার অন্তর্ভুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই এই মহকুমা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশেষভাবে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। সে দিক থেকে বিচার করে বনগাঁ মহকুমাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে বনগাঁ মহকুমাকে আলাদা সাংগঠনিক জেলায় রূপান্তরিত করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে কাকে আনা হবে, সে ব্যাপারেও অনেক ভাবনা চিন্তা করছে দল। কারণ, দল মনে করছে, এই মহকুমায় সংগঠনের ভেতরেই নেতৃত্বের কিছু সমস্যা রয়েছে। আর যে কারণেই বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে।

নতুন করে সাংগঠনিক জেলা তৈরি হওয়ার পর ব্লক এবং শহর কমিটিও নতুন করে তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে পুরনোদের পাশাপাশি অনেক নতুন মুখও দায়িত্ব পেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। সেক্ষেত্রে স্বচ্ছ এবং সাংগঠনিক দক্ষতার মাপকাঠি বিচার করা হবে। এর পাশাপাশি, বিধানসভা নির্বাচনের আগে নানা কারণে দলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে যারা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন, এমন বেশ কিছু প্রাক্তন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব দলে ফিরে আসার জন্য বর্তমানে মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাদেরকেও দলে ফেরানো হবে কিনা, সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এর পাশাপাশি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক, বর্তমানে বাগদা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে নিয়েও আলোচনা চলছে।

তবে এ ব্যাপারে সবটাই চূড়ান্ত হবে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি দিল্লি থেকে ফেরার পর। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আশা করছে, পুরসভা এবং লোকসভা নির্বাচনের আগে দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও মজবুত করতে দলের তৃণমূল স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত সংগঠনকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে পারলে, তার ফল মিলবে আগামী পুরসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন