Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

বিলুপ্তির পথে কৃষি জমির মাছ

 

Fish on agricultural land are on the verge of extinction

লক্ষণ সাঁতরা‌ :‌ বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে গ্রাম বাংলার কৃষিজমিতে বর্ষার শুরু থেকে শীতকালের শেষ পর্যন্ত কৈ, মাগুর, সিঙ্গি, শোল, ল্যাঠা, চ্যাং, প্যাঁকাল, মৌরোলা ও পুঁটি সহ নানা প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যেত। এর সঙ্গে গুগলি, শামুক ও কাঁকড়া তো ছিলই। জমির জল শেষ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে ওই সব মাছ নয়নজুলি ও পাট ডোবাগুলিতে জমা হতো।

উন্নত প্রথায় চাষ আবাদ শুরু হওয়ায় কৃষি জমিতে ব্যাপক হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ শুরু হয়ে যায়। এর ফলে কৃষকের বন্ধু কেঁচো, চাষের জমি থেকে বিনাশ হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পুঁটি, মৌরলা সহ ছোটখাটো মাছগুলি বিলুপ্ত হতে শুরু করে।

একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কঠিন প্রাণের জিওল মাছগুলি বাঁচার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। জমিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের সময় জমির আলে কাঁকড়া ও শামুকের গর্তে আশ্রয় নিতে থাকে। এর পরের দশকে মাগুর ও সিঙ্গি মাছগুলিও বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমানে ভরা বর্ষার সময় হাতে গোনা কয়েক দিন কিছু কিছু জমিতে সামান্য কিছু ল্যাঠা মাছ ও শামুক ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। বছরের পর বছর পাট চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে চাষীরা এখন আর পাট চাষ করেন না। স্বাভাবিকভাবেই পাট ডোবাগুলিও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষার পরে ওই ডোবা এবং নয়নজুলিগুলিও মৎস্যহীন।

জীব বৈচিত্র হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাংলার সঙ্গে শহরেও চুনো মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। ধান ও পাট ক্ষেতের এইসব মাছ স্বল্প খরচে গ্রামের গরীব মানুষদের পুষ্টি অনেকাংশেই পূরণ করতো। যাদের ওটুকুও কেনার ক্ষমতা থাকতো না, তাঁরা জমির কাঁকড়া, গুগলি ও শামুক দিয়ে পুষ্টির অভাব পূরণ করতেন। এখন ওসবই ইতিহাস। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা না করলে অদূর ভবিষ্যতে পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের পুঁটি, মৌরলা সহ অনেক প্রজাতির দেশি মাছকেই ছবি দেখে চিনতে হবে।



  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন