Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

অপারেশন সিঁদুর : পাকিস্তান নয়, ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরোক্ষ ভূমিকা নেয় চিন ‌এবং তুরস্কও

Operation-Sindoor

সমকালীন প্রতিবেদন : কাশ্মীরের পহেলগামে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী যে অপারেশন শুরু করেছিল, তা শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই নয়—বরং সেই সংঘাতে পর্দার আড়ালে ছিল চিন ও তুরস্কের সক্রিয় সহযোগিতা। এমনটাই বিস্ফোরক দাবি করলেন ভারতীয় সেনার উপসেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিংহ।

শুক্রবার দিল্লিতে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (‌ফিকি)‌ এর এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনা আধিকারিক জানান, অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানকে সরাসরি তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছিল চিন। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সহযোগিতায় তুরস্কও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বলে জানান তিনি।

উপসেনাপ্রধান বলেন, “এই সংঘাতে একদিকে ছিল পাকিস্তান, সামনে থেকে আক্রমণ করছিল। কিন্তু তার পেছনে ছিল চিন—তথ্য, অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তায়। তুরস্কও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানের পাশে ছিল এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সমর্থন দিয়ে গেছে।” লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিংহ জানান, সংঘাতের সময়ে ডিজিএমও স্তরের আলোচনায় পাকিস্তান জানায়, তারা অবহিত যে ভারতীয় বাহিনী ভেক্টর মিসাইল মোতায়েন করেছে। তাঁর মন্তব্য, “ওরা যখন আমাদের হামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছিল, তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় তারা চিনের কাছ থেকে রিয়েল টাইম ইনপুট পাচ্ছিল।”

চিনের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেনা উপসেনাপ্রধান বলেন, “গত পাঁচ বছরে পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম এসেছে চিন থেকে। এই সংঘাতকে তারা ব্যবহার করেছে অস্ত্র পরীক্ষার ‘লাইভ ল্যাবরেটরি’ হিসেবে।” তিনি উল্লেখ করেন, চিনের বহু পুরনো কৌশল হল “borrowed knife to kill”—অর্থাৎ, নিজের হাতে না লড়ে অন্যকে দিয়ে শত্রুকে আঘাত হানানো। পাকিস্তান সেই মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে।

এই সংঘাতে তুরস্কের ভূমিকাও গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিংহ। তাঁর দাবি, সংঘাত চলাকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়, যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং গোয়েন্দা সহায়তার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

অপারেশন সিঁদুর শুরু হয়েছিল ৭ মে, এবং চার দিন ধরে চলা সংঘাতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই ড্রোন, যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও ভারী গোলাবারুদের ব্যবহার করে। পাকিস্তান পুঞ্চ ও রাজৌরি জেলায় হামলা চালালে প্রাণ হারান অন্তত ১০ জন সাধারণ নাগরিক। পালটা জবাবে ভারত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ও পরিকাঠামোতে নির্ভুল আঘাত হানে।

১০ মে, উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। ভারতীয় সেনার দাবি, অভিযানে অন্তত ১০০ জন জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিংহ বলেন, “এই সংঘাতে নাগরিক এলাকায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ঠিকই, কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য আরও উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম গড়ে তোলা জরুরি।” তাঁর মতে, অপারেশন সিঁদুর ভারতের কাছে এক নতুন শিক্ষা—একটি সীমান্ত মানেই আজ আর এক শত্রু নয়, বরং বহুস্তরীয় সংঘাতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন