Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১

রাজনীতি ছাড়তে চেয়ে বিষ্ফোরক পোস্ট বাবুল সুপ্রিয়র

 

Explosive post Babul Supriya

সমকালীন প্রতিবেদন :‌ আলবিদা। চললাম...

রাজনীতি ছাড়লেন বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে এই মুহূর্তে গোটা দেশ তোলপাড়। শনিবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিজেপি সাংসদ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, জনসেবা করতে গেলে রাজনীতিতে না থেকেও করা যায়। আগে নিজেকে একটু গুছিয়ে নিই। তারপর...

রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস গ্রহণের ইঙ্গিত স্পষ্ট করে বাবুল শুধু লিখেছেন, চললাম। লিখেছেন, পরিবার, বন্ধু সবার কথা শুনেছি। অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। কেউ ডাকেও নি। বেশ কিছুটা সময় তো থাকলাম। কিছু মন রাখলাম। কিছু মন ভাঙলাম। আমি আমার মতো করেই বলছি, চললাম...

Explosive post Babul Supriya
এদিন বাবুল সুপ্রিয় তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বাবা, মা, স্ত্রী, মেয়ে, দু-একজন প্রিয় বন্ধু, সবার কথা শুনেছি। সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেছি। কোথাও হয়তো আপনাদের আমার কাজে খুশি করলাম। কোথাও হয়তো নিরাশ হতাশ করলাম। মূল্যায়ন আপনারাই না হয় করবেন। 

বাবুল এটাও স্পষ্ট করে বলেছেন, হ্যা, সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দিচ্ছি। লিখেছেন, বিগত কয়েকদিনে বারবার অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার কাছে রাজনীতি ছাড়ার সংকল্প নিয়ে গিয়েছি। আমি ওঁদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ যে ওঁরা প্রতিবারই আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি তাঁদের ভালবাসা কোনওদিন ভুলব না। আর তাই তাঁদের কাছে গিয়ে আবার এই কথা বলার ধৃষ্টতা দেখাতে পারব না আমি। বিশেষ করে আমার আমি কী করতে চাই তা যখন আমি অনেকদিন আগেই ঠিক করে ফেলেছি। কাজেই আবার একই কথার পুনরাবৃত্তি করতে গেলে কোথাও না কোথাও তাঁরা ভাবতে পারেন যে আমি কোনও পদের জন্য দর কষাকষি করছি। আর তা যখন একেবারেই সত্য নয়, তখন একেবারেই চাই না তাঁদের মনের ঈশান কোণেও সেই সন্দেহের উদ্রেক হোক, এক মুহূর্তের জন্য হলেও।

২০১৪, ২০১৯ পরপর দুবার আসানসোল থেকে বিরাট ব্যবধানে জিতে বিজেপি সাংসদ হন বাবুল সুপ্রিয়। দু’বারই প্রতিমন্ত্রীও হন। কিন্ত পূর্ণ মন্ত্রিত্ব পাওয়া হয়নি তাঁর। এবার তো মন্ত্রিত্বের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ফেসবুকে তা নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তার পর থেকেই তাঁকে ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে জল্পনা চলছিল। এদিন সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ছাড়লেন তিনি। তবে মন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়েই শুধু নয়, একাধিক বিষয় নিয়ে দলের সঙ্গে তাঁর মতানৈক্য প্রকাশ্যে আসছিল। এদিনের ফেসবুকে পোস্টে সেই সমস্ত ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

কেন রাজনীতি ছাড়লেন তিনি? সেই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন বাবুল। লিখেছেন,  'প্রশ্ন উঠবেই, কেনই বা রাজনীতি ছাড়তে গেছিলাম? মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সঙ্গে তার কি কোনও সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে–কিছুটা তো নিশ্চয় আছে ! তঞ্চকতা করতে চাইনা। তাই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে-আমাকেও তা শান্তি দেবে।'‌

বাবুল লিখেছেন, ২০১৪ আর ২০১৯ -এর মধ্যে অনেক ফারাক। তখন শুধু BJP-র টিকিটে আমি একাই ছিলাম। (With due respect to Ahluwaliaji - GJM was BJP’s ally in the Darjeeling seat) কিন্তু আজ বাংলায় বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। আজ পার্টিতে অনেক নতুন Bright তরুণ তুর্কী নেতা যেমন আছে, তেমনি অনেক প্রবীণ বিদগ্ধ নেতাও আছেন। এঁদের নেতৃত্বে দল এখান থেকে অনেক দূর যাবে, এটা বলাই বাহুল্য। বলতে দ্বিধা নেই যে, আজ পার্টিতে কোনও একজন ব্যক্তি বিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোন বড় ব্যাপার নয়, তাও স্পষ্ট হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়াটাই যে সঠীক সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমার দৃঢ়, সুদৃঢ় বিশ্বাস !

এদিনের পোস্টে বাবুল বলেছেন, আরেকটা কথা.. ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল - তা হতেই পারে। কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিলো। তার জন্য কোথাও আমি দায়ী (একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলাম যা পার্টির শৃংখলাভঙ্গের পর্যায়েই পড়ে), আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী। যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাইনা - কিন্তু Senior নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, 'গ্রাউন্ড জিরো'-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনোভাবেই সাহায্য করছিলো না, তা বুঝতে 'রকেট বিজ্ঞান'-এর জ্ঞানের দরকার হয়না। এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত। তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি। কোথাও চলে গিয়েছিলাম এটা আমি মানি না - আমি 'আমার' সঙ্গেই ছিলাম - তাই কোথাও ফিরে যাচ্ছি আজ একথাও বলবো না। বহু নতুন মন্ত্রী এখনো সরকারি বাড়ী পাননি তাই আমার বাড়িটি আমি এক মাসের মধ্যে (যত তাড়াতাড়ি সম্ভব - হয়তো তার আগেই) ছেড়ে দেবো।

বাবুল লিখেছেন, আকাশে একটি উড়ানে স্বামী রামদেবজির সঙ্গে একটা ছোট্ট কথোকপথন হয়েছিল। একদমই ভালো লাগেনি যখন বুঝেছিলাম যে বাংলাকে বিজেপি খুব seriously নিচ্ছে, শক্তির সঙ্গে লড়বেও কিন্তু বোধহয় কোনো আসন আশা করছেনা। মনে হয়েছিল, যে বাঙালি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী, অটল বিহারী বাজপেয়ীকে এত শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে, সেই বাঙালি বিজেপিকে একটাও আসনে জেতাবে না এটা কি করে হতে পারে !!! বিশেষ করে সারা ভারত যখন ভোটের আগেই ঠিক করে ফেলেছিলো যে তাঁদের যোগ্য উত্তরসূরি, মনোনীয় শ্রী নরেন্দ্র মোদিই ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হবেন, তখন বাংলা কেন অন্যরকম ভাববে। চ্যালেঞ্জটা একজন বাঙালি হিসেবে তখনই নেওয়া উচিত বলে মনে হয়েছিল তাই সবার কথা শুনেছি কিন্তু নিজের যা মনে হয়েছিল তাই করেছি - অনিশ্চয়তাকে ভয় না পেয়ে নিজে যা ঠিক মনে করেছি, 'মন-প্রাণ' দিয়ে করেছি।

1992 - তে Standard Chartered Bank-এর চাকরী ছেড়ে মুম্বাইতে পালানোর সময়েও তাই করেছিলাম, আজ তাই করলাম !!! 

চললাম..হ্যাঁ, কিছু কথা বাকি রয়ে গেলো..হয়তো কখনো বলবো..আজ নাই বা বললাম..চললাম..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন