Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

ছেলেবেলার স্বপ্নপূরণে মহাকাশ সফরে আমাজন কর্তা

ছেলেবেলার স্বপ্নপূরণে মহাকাশ সফরে আমাজন কর্তা


সমকালীন প্রতিবেদন : তখন তাঁর বয়স মাত্র পাঁচ। সেই সময় থেকেই মনের কোণে উঁকি দিতে শুরু করে স্বপ্নটা। মহাকাশে পা রাখার স্বপ্ন। অবশেষে তা পূরণ হতে চলেছে। মহাশূন্যে সফরে যাচ্ছেন আমাজন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির কর্তা জেফ বেজোস। সঙ্গী তাঁর ভাই মার্ক। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০ জুলাই তাঁরা মহাকাশে পাড়ি দেবেন। এই যাত্রার আয়োজন করেছে বেজোসেরই সংস্থা ব্লু অরিজিন। নিউ শেফার্ড প্রোজেক্টের একটি রকেট পাড়ি জমাবে মহাশূন্যে। এই সফরে আমাজন কর্তার পাশের আসনে বসতে পারবেন আর একজন। সেই সৌভাগ্যবান কে, তা অবশ্য এখনও অজানা। তাঁকে খুঁজে নিতে ডাকা হয়েছে নিলাম। গোটা পৃথিবী থেকে প্রায় ৬ হাজার উৎসাহী অংশ নিয়েছেন সেই নিলামে। তবে আমাজন কর্তার পাশের আসনে বসে মহাকাশ থেকে পৃথিবী দেখার সুযোগটা একেবারে ফ্রিতে মিলছে না। এর জন্য দিতে হবে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার। ওই টাকা জমা পড়বে ব্লু অরিজিন সংস্থার তহবিলে।


মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। যে যানটি চড়ে মহাকাশে ঘুরতে যাচ্ছেন বেজোস, সেটির নাম রাখা হয়েছে অ্যালেন শেফার্ড। উচ্চতায় রকেটটি প্রায় ৬০ ফুট। ছ'জন যাত্রী একসঙ্গে এতে চড়তে পারেন। এর আগে যানটি ১৫ বার মহাশূন্যে গিয়েছে। কিন্তু এবারই প্রথম পৃথিবী থেকে কোনও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে সে। বলা ভাল, বেজোসের সংস্থাই প্রথম, যারা পৃথিবী থেকে প্রথম মহাকাশে পর্যটক নিয়ে যাচ্ছে। নিউ গ্লেন নামে আরও একটি রকেট থাকছে সঙ্গে। সেটি মূলত ভারী মালপত্র বহন করার জন্য।


শব্দের চেয়ে তিনগুণ বেশি গতিতে রকেটটি উঠে যাবে সোজা উপরে। মহাশূন্যে পাক্কা ১১ মিনিট থাকবে সেটি। এর মধ্যে ৩ মিনিট ভারশূন্য অবস্থায় থাকবেন যাত্রীরা। মহাকাশের সীমা ছোঁয়ামাত্রই রকেট থেকে আলাদা হয়ে যাবে ক্যাপসুল। যাত্রীরা নামবেন প্যারাসুটে চেপে। পশ্চিম টেক্সাসের একটি মরুভূমিতে নামবে ওই প্যারাসুট। যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এখন শুধু বাক্স প্যাটরা গুছিয়ে রকেটে চেপে বসার অপেক্ষা। সফরের আগে মাত্র একদিনের ট্রেনিং। তার পরই অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় ডুব দেওয়া। 

ছেলেবেলার স্বপ্নপূরণে মহাকাশ সফরে আমাজন কর্তা


এবার দেখে নেওয়া যাক, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বেজোসের অতীতকে। কেনই বা তাঁর মহাকাশে চড়ার স্বপ্ন। কীভাবেই বা সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। আক্ষরিক অর্থে খুব ছোটবেলায় দাদু আকাশে ওড়ার স্বপ্নটা বুনে দিয়েছিলেন বেজোসের মনে। স্কুলের বক্তৃতায় একবার যখন তিনি বলেছিলেন, মানুষ উপনিবেশ গড়বে মহাশূন্যে। সেকথা শুনে চমকে উঠেছিলেন সবাই। এ ছেলে বলে কী। তার পর খেলতে খেলতে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে সব খেলনা খুলে ফেলা। আবার সেগুলিকে লাগানোর চেষ্টা। এভাবেই হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিংকে ভালবেসে ফেলেছিলেন বেজোস। বিজ্ঞানের প্রতিও তাঁর ভালবাসা ছিল অফুরান। কম্পিউটার বিজ্ঞানের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা। তারপর নিউইয়র্কে গিয়ে ফিনান্স কোম্পানিতে চাকরি। সেখানেই পরিচয় ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে। যিনি পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী হয়েছিলেন। তবে চাকরি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি বেজোসের। নিজে কিছু করার তাড়নায় চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। চলে আসেন আমেরিকার পশ্চিম প্রান্তের শহর সিয়াটেলে। নিজের জমানো আর পরিবারের দেওয়া কিছু অর্থ। সবমিলিয়ে এক লাখের সামান্য বেশি ডলার। ওইটুকুই ছিল সম্বল। তা দিয়েই গড়ে তোলেন স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আমাজন। শুরুটা হয়েছিল পুরনো বই বিক্রি দিয়ে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ব্যবসার পরিসর। কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও বেজোস ভুলে যাননি তাঁর ছোটবেলার স্বপ্নের কথাটা। আর তাই বন্ধু তথা কল্পবিজ্ঞানের লেখক নিল স্টিফেনসনের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি গড়ে তোলেন ব্লু অরিজিন সংস্থা। যারা স্বপ্ন দেখায় মহাকাশ ভ্রমণের। ছ'বছর নিরন্তর গবেষণার পর আত্মপ্রকাশ করে ব্লু অরিজিন। আর এবার সে ইতিহাস সৃষ্টির পথে।







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন