Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

এসআইআর বিতর্কে উত্তাল ঠাকুরনগর, মতুয়াদের ‌উপর হামলা, সংঘর্ষে চরম উত্তেজনা

 

সমকালীন প্রতিবেদন : এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে চরম উত্তেজনার সাক্ষী থাকল ঠাকুরনগর মতুয়াগড়। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার মতুয়া সম্প্রদায়ের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক মারপিট, ধস্তাধস্তির অভিযোগ উঠেছে। মতুয়া সংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুরের অনুগামীদের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরপন্থীদের এই সংঘর্ষে পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিছিল নিয়ে শান্তনু ঠাকুরের বাড়ির কাছে পৌঁছনোর পরই উত্তেজনা চরমে ওঠে। অভিযোগ, ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়া হয়, একে অপরকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। ফলে গোটা ঠাকুরনগর মতুয়াগড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

এই অশান্তির মূল কারণ শান্তনু ঠাকুরের সাম্প্রতিক এক মন্তব্য। দিন কয়েক আগে বনগাঁর গ্যাঁড়াপোতা এলাকার এক সভায় সিএএ ও এসআইআর প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, এসআইআর কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রক্রিয়া এবং সরকারকে সহযোগিতা করতে হলে যদি সমস্যার মুখে পড়তে হয়, তা মেনেই নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন, ৫০ লক্ষ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি মুসলমানের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে গিয়ে যদি তাঁর সম্প্রদায়ের এক লক্ষ মানুষের ভোটাধিকার সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাও ‘লাভজনক’ হতে পারে।

এই মন্তব্যের পর থেকেই মতুয়া সমাজের একাংশের মধ্যে প্রবল উদ্বেগ ও ধন্দ তৈরি হয়। মমতা ঠাকুরপন্থীদের দাবি, এক লক্ষ মতুয়ার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে– এই আশঙ্কাই তাঁদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছে। সেই প্রেক্ষিতেই শান্তনু ঠাকুরের কাছে সরাসরি জবাব চাইতে মিছিলের আয়োজন করা হয়।

মমতা ঠাকুরের অভিযোগ, শান্তনুর বাড়ির কাছে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর অনুগামীদের উপর হামলা চালানো হয়। তাঁর দাবি, তাঁরা জবাব চাইতে গিয়েছিলেন, মারামারি করতে নয়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে ‘গুন্ডাবাহিনী’ তাঁদের উপর চড়াও হয়েছে। হামলাকারীরা সব বিজেপির লোক। তাঁর প্রশ্ন, মতুয়াদের কি প্রতিবাদ জানানোর অধিকার নেই?

অন্যদিকে, শান্তনু ঠাকুরপন্থীদের পাল্টা দাবি, প্রথমে মমতা ঠাকুর অনুগামীরাই হামলা চালায়। তাঁদের অভিযোগ, যাঁরা অশান্তি পাকিয়েছে, তাঁরা প্রকৃত মতুয়া নয়, বরং তৃণমূলের লোকজনকে ‘মতুয়া সাজিয়ে’ পাঠানো হয়েছে। একই সুরে শান্তনু ঠাকুরও দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।

সব মিলিয়ে এসআইআর ইস্যুকে কেন্দ্র করে মতুয়া সমাজের অন্দরে বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক তরজার পাশাপাশি রাস্তার সংঘর্ষে রূপ নেওয়া এই বিবাদে ঠাকুরনগরে এখন থমথমে পরিস্থিতি। প্রশাসনের নজরদারির মধ্যেই এলাকায় টানটান উত্তেজনা বজায় রয়েছে।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন