সমকালীন প্রতিবেদন : শুক্রবার গোপালনগরের মেদে বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চে তৃণমূলের ভেতরকার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এলো। মঞ্চ থেকেই নাম না করে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে তীব্র মন্তব্য করেন রাজ্যসভার সাংসদ ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা ঠাকুর। তিনি বলেন, “আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। অনেক নেতা হুমকি দিয়ে কথা বলছেন — ২০২১ সালে তার ভূমিকা স্মরণীয়। নতুন যারা সামনের সারিতে এসেছে, তাদের জায়গা দিতে হবে।”
মঞ্চে অবশ্য মমতা ঠাকুর তাঁর কথাবার্তায় সরাসরি দলের কোনও ব্যক্তির নাম করেননি। তবে তাঁর বক্তব্যে জেলা পর্যায়ের নেতৃত্ব ও গোষ্ঠীভিত্তিক বিদ্বেষের ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল। উপস্থিত নেতারা ও স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক মাসে বনগাঁ অঞ্চলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং আগামী নির্বাচনের এই দ্বন্দ্ব আরও তীব্রতর হতে চলেছে।
বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমানে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন দত্ত মঞ্চে এসে জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসকে নাম করে আক্রমণ করেন। সৌমেন অভিযোগ করেন, “আমি দালালি করে খাই না, তোলা-তুলে খাই না, চাকরি বিক্রি করে খাই না।” তিনি দাবি করেন, ২০০৯-১৩ সাল থেকে তার সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন ও ব্যক্তিগত রুচি-প্রভাবের কারণে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে এবং ২০২৩ সাল থেকে তা তীব্রতর হয়েছে। তবুও সৌমেন নিশ্চয়তা দিয়েছেন, বনগাঁয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলেও তৃণমূল ২০২৬ সালে জয়ী হবে বলে তাদের আত্মবিশ্বাস।
জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস সাংবাদিকদের সামনে এই ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ওই মিটিংয়ের অনুমোদন জেলা দফতর থেকে ছিল না। যারা অনুপ্রবেশ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দলের কাছে নোটিশ দেওয়া হবে। তিনি দাবি করেন, দলের কেউ যদি ভুল করে থাকে তবে প্রতিষ্ঠান সঠিক ব্যবস্থা নেবে এবং বনগাঁ মহকুমা ২০২৬ সালে তৃণমূলকেই উপহার দেওয়া হবে।
জেলা সভাপতি আরও বলেন, '২০১১ সালের আগে যারা সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে অত্যাচারিত হযেছিলেন, তাদের অনেকেই আমরা বসিয়ে দিয়েছি। যার ফল আমাদের পেতে হয়েছে। তাই ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে আমরা সেইসব কর্মীদের দলে ফিরিয়ে এনে আবার সক্রিয় করতে চাই। আর শুধুমাত্র নিজের স্বার্থে দল করা চলবে না।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন