সমকালীন প্রতিবেদন : স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে নয়া অর্থনৈতিক দিশা দেখালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লালকেল্লার প্রাচীর থেকে তিনি ঘোষণা করেন, “আমরা নেক্সট জেনারেশন জিএসটি সংস্কার আনছি, যা দেশের সর্বত্র করের বোঝা কমাবে। এ বছরের দীপাবলিতে আমি আপনাদের জন্য ডবল দীপাবলি নিয়ে আসব।” তাঁর এই ঘোষণার পরই কর কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ১২ শতাংশ করের স্তরে থাকা বহু পণ্যের উপর কর কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হতে পারে। একইভাবে ২৮ শতাংশ করের স্তরে থাকা অধিকাংশ পণ্য নেমে আসবে ১৮ শতাংশের স্ল্যাবে। তবে নেশা সংক্রান্ত বিশেষ কিছু পণ্য—যেমন সিগারেট, বিয়ার এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের উপর আলাদা করে ৪০ শতাংশ হারে কর বসানো হবে।
কর কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে ওষুধ, টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন, কৃষিযন্ত্র, সাইকেল, এমনকি বিমা ও শিক্ষা পরিষেবার খরচও কমতে পারে। ফলে সরাসরি উপকৃত হবেন সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মানুষের খরচ করার ক্ষমতা বাড়লে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
বর্তমানে ১২ শতাংশ করের আওতায় থাকা যেসব পণ্য রয়েছে, সেগুলি নামানো হতে পারে পাঁচ শতাংশের স্ল্যাবে। এর মধ্যে রয়েছে—কনডেন্সড মিল্ক, শুকনো ফল, নোনতা খাবার, কার্পেট, ছাতা, সাইকেল, বাসনপত্র, জুট বা কাপড়ের ব্যাগ এবং এক হাজার টাকার কম দামের জুতো। অন্যদিকে, ২৮ শতাংশ করের স্ল্যাবে থাকা ৯৯ শতাংশ পণ্য চলে আসতে পারে ১৮ শতাংশের আওতায়।
প্রস্তাবিত জিএসটি কাঠামোয় থাকবে তিনটি স্ল্যাব—৫ শতাংশ, ১৮ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ। কর র্যাশনালাইজেশনের জন্য ইতিমধ্যেই গঠিত হয়েছে মন্ত্রীদের একটি গোষ্ঠী। কেন্দ্র প্রস্তাবটি সেই গোষ্ঠীর কাছে পাঠিয়েছে। এই গোষ্ঠী তাদের সুপারিশ জানাবে জিএসটি কাউন্সিলকে, যার নেতৃত্বে আছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীরাও ওই কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত।
জিএসটি কাউন্সিল চাইলে প্রস্তাব সরাসরি অনুমোদন করতে পারে, প্রয়োজন মতো সংশোধন করতে পারে অথবা পুরোপুরি বাতিলও করতে পারে। তবে সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত মিলেছে যে, দীপাবলির আগে এই পরিবর্তন কার্যকর হলে তা হবে সাধারণ মানুষের জন্য প্রকৃত ‘ডবল দীপাবলি’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন