সমকালীন প্রতিবেদন : মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার আদর্শকে সামনে রেখে, ঐতিহ্য মেনে কলকাতার রামমোহন রায় রোডের শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ ও নগেন্দ্র মিশনে উদযাপিত হলো রাখি বন্ধন উৎসব। শুক্রবার সকাল থেকেই মঠ প্রাঙ্গণে ছিল উৎসবমুখর আবহ। আবাসিক প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ভক্ত-শ্রদ্ধালু যোগ দেন এই বার্ষিক আয়োজনে।
বহু বছর আগে মঠের প্রাক্তন আচার্য ড. রঘুপতি মুখোপাধ্যায় এই উৎসবকে নতুন মাত্রা দেন এবং মঠের নিজস্ব রীতিতে পালন শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবছরও আবাসিক ও ভক্তদের হাতে রাখি পরিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেন মিঠু ভট্টাচার্য। রাখি পরানোর সময় একে অপরের প্রতি শুভকামনা ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ ছিল চোখে পড়ার মতো।
উৎসবের অংশ হিসেবে ধর্মীয় পর্বও অনুষ্ঠিত হয়। ভক্তরা ভজন, কীর্তন এবং প্রার্থনায় অংশ নেন। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের জীবন ও কর্মের স্মৃতিচারণ করা হয়। মঠ ও মিশন প্রাঙ্গণ সজ্জিত ছিল ফুল ও আলোকসজ্জায়, যা পরিবেশকে আরও আনন্দমুখর করে তোলে।
মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রপৌত্রীর পুত্র ড. শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আচার্য ড. রঘুপতি মুখোপাধ্যায় মূলত মঠের আবাসিক ছাত্রদের জন্য রাখি বন্ধন উৎসবকে আলাদা রূপ দেন। তিনি প্রয়াত হলেও, মঠে সেই ধারাবাহিকতা আজও পূর্ণ মর্যাদায় পালন করা হয়।”
মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ ছিলেন উনিশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের শুরুর এক বিশিষ্ট আধ্যাত্মিক গুরু, যিনি ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও মানবিকতার আদর্শে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। জীবনের শেষ পর্বে কলকাতার রামমোহন রায় রোডে তাঁর ত্যাগী শিষ্য ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারীসহ তাঁর গৃহী শিষ্য- ভক্তরা শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর সাধনা ও শিষ্যদের শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে ওঠে। মঠে নিয়মিত ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যার মধ্যে রাখি বন্ধন উৎসব একটি অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান।
এই উৎসব শুধু একটি ধর্মীয় বা সামাজিক আচার নয়, বরং মঠের বাসিন্দা ও ভক্তদের কাছে এটি হৃদয়ের মিলনমেলার দিন–যেখানে পারস্পরিক ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন