Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রাখি বন্ধন উৎসব

 

Rabindranath-and-Raksha-Bandhan

সমকালীন প্রতিবেদন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে রাখি বন্ধন উৎসবের একটি বিশেষ রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট রয়েছে, যা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের স‌ঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। 

এই উৎসবের সূচনা হয়েছিল ১৯০৫ সালে, যখন ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলা প্রদেশকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা—হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা।

বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় বাংলার জনগণ যখন প্রতিবাদে সোচ্চার হয়, তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি অনন্য রীতির প্রচলন করেন। তিনি রাখি বন্ধন উৎসবকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। 

তাঁর বিশ্বাস ছিল যে, হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের বিভাজন নীতি ব্যর্থ করা সম্ভব। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর, যা ছিল বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হওয়ার দিন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার রাস্তায় নেমে আসেন এবং হিন্দু ও মুসলিমদের হাতে রাখি বাঁধার মাধ্যমে একাত্মতার বার্তা দেন। 

সেই দিনটি ছিল ঐতিহাসিক, কারণ রাখি শুধুমাত্র ভাই-বোনের বন্ধনের প্রতীক হয়ে ওঠেনি, বরং এটি একটি জাতিগত ঐক্যের প্রতীক হিসেবে স্থান পায়।রবীন্দ্রনাথের এই উদ্যোগের ফলে বাংলায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক অসাধারণ সংহতির সৃষ্টি হয়। 

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এই উদ্যোগ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ১৯১১ সালে ব্রিটিশ সরকারকে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে।

আজও, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই রাখি বন্ধন উৎসবের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রাখার মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজনকে প্রতিহত করা সম্ভব। এটি কেবলমাত্র একটি রীতি নয়, বরং এটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।‌‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন