সমকালীন প্রতিবেদন : অবশেষে ১২৮ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। ১৯০০ সালের পর আবার অলিম্পিকের মঞ্চে ফিরছে ক্রিকেট। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের ক্রিকেটকে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির তরফে সম্প্রতি এই ঘোষণা করা হয়েছে, যা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক্স শুরু হবে ১২ জুলাই, শেষ হবে ২৯ জুলাই। উদ্বোধনের দিন থেকেই শুরু হবে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। প্রথমে নামবে মহিলা দলগুলি। পুরুষদের ইভেন্ট শুরু হবে তার পর। সব মিলিয়ে ছ’টি দেশ অংশ নেবে এই প্রতিযোগিতায়। আয়োজক দেশ আমেরিকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জায়গা পাবে পুরুষ ও মহিলা—দু’টি বিভাগেই। বাকি পাঁচটি দেশ কীভাবে বাছাই করা হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল।
ক্রিকেট প্রতিযোগিতাগুলি অনুষ্ঠিত হবে পোমেনার ফায়ারগ্রাউন্ডস স্টেডিয়ামে, যা মূল শহর লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ও সন্ধে ৬টা ৩০ মিনিটে প্রতিদিন দু’টি করে ম্যাচ হওয়ার কথা। ভারতের দর্শকরা খেলা দেখতে পাবেন সকাল ৭টা এবং রাত সাড়ে ৯টার সময়।
প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, ১২ জুলাই থেকে শুরু হয়ে মহিলাদের পদকের লড়াই হবে ২০ জুলাই। ১৪ ও ২১ জুলাই কোনও ম্যাচ হবে না। পুরুষদের ফাইনাল তথা সোনা জয়ের লড়াই হবে ২৯ জুলাই, অর্থাৎ গেমসের শেষ দিনেই। প্রতিটি দলে থাকবেন ১৫ জন করে ক্রিকেটার। ফলে মহিলা ও পুরুষ বিভাগ মিলিয়ে ১৮০ জন ক্রিকেটারের জন্য তৈরি থাকবে অলিম্পিক্সের দরজা।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অলিম্পিক গেমসে অন্তর্ভুক্ত হল ক্রিকেট। ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে প্রথমবার ক্রিকেট খেলা হয়েছিল। সেইবার মাত্র দু’টি দেশ—ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স অংশ নিয়েছিল। ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে সোনা জিতেছিল ইংল্যান্ড। ২০২৮-এর পর ২০৩২ সালে ব্রিসবেন অলিম্পিক্সেও ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্বকাপে বা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো প্রথম সারির দেশগুলির একাধিক তারকা খেলোয়াড় থাকেন। অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ না পেলে সেদিক থেকে অনেক বিতর্কের জন্ম নিতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সব বিতর্ক ও কৌতূহলের ঊর্ধ্বে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়—অলিম্পিকে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন কেবল এক নতুন যুগের সূচনা নয়, এটি বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেটকে এক অনন্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন