সমকালীন প্রতিবেদন : বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন বনগাঁ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়া এলাকা। দিনের পর দিন জল জমে থাকায় ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় যান বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। কিন্তু জলবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েও চরম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
বিধায়কের অভিযোগ, মাঠপাড়ায় ঢুকতেই তাঁকে ঘিরে ধরে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। নেতৃত্ব দেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহা। বিধায়কের চারপাশে জড়ো হয়ে শুরু হয় 'গো-ব্যাক' স্লোগান। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের দাবি, বিধায়ক সাধারণ মানুষের দুর্দশার সময় কখনো আসেন না, হঠাৎ করে এলাকায় প্রবেশ করে রাজনীতি করতে এসেছেন।
অশোক কীর্তনীয়া বলেন, 'আমি এলাকার মানুষের কষ্টের কথা শুনে এসেছিলাম। কিন্তু তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে আমাকে বাধা দেয়। কাউন্সিলর নিজেই আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেনস্থা করেন। আমার নিরাপত্তারক্ষী বাধা না দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। সাধারণ মানুষ সব দেখছে। ২০২৬ সালে ভোটে তারাই এর জবাব দেবে।'
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিধায়ককে ঘিরে ধরা এবং তর্কাতর্কির মধ্যেও বড় কোনও হাতাহাতি হয়নি, তবে মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের রূপ নিতে পারত। বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষী এবং বিধায়ক নিজে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঘটনাস্থল থেকে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসেন। তবে এই ঘটনায় তিনি যথেষ্ট বিরক্ত। তাঁর অভিযোগ, 'পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ছাপ্পা ভোট দিয়ে জিতেছিলেন পাপাই রাহা। মানুষ এর জবাব সময়মতো দেবে।'
অন্যদিকে, তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহা বিধায়কের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, 'বিধায়ক হ ওয়ার পর তাকে এলাকায় একবারও দেকা যায় নি। ২০২৬ সালের ভোট আসছে, তাই ফের তাকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে। মাঠপাড়ার মানুষ প্রকৃত পরিস্থিতি জানে। তারা বিধায়ককে প্রশ্ন করলে উনি একপ্রকার পালিয়ে যান। এটা সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, রাজনীতির কিছু নয়।'
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় জল জমে থাকায় গত কয়েক দিন ধরেই চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকার মানুষ। নর্দমা উপচে উঠছে, বাড়ির ভিতরেও জল ঢুকেছে। পরিষেবা প্রায় অচল। এই অবস্থায় রাজনৈতিক তরজা না করে সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান তারা। এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনগাঁয় রাজনৈতিক চাপানউতোর তীব্র হয়েছে। জলবন্দি মানুষের অসহায়তার পাশাপাশি রাজনৈতিক সংঘাত এখন চর্চার কেন্দ্রে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন