সমকালীন প্রতিবেদন : প্রখর রোদ ছাড়া, ঘরের ভেতরে বসেই পাবেন ভিটামিন ডি। রোধ করতে পারবেন রিকেট। হাড় নরম ও দুর্বল হবে না। বয়স্কদের ভিটামিন ডি এর অভাবে হবে না 'অস্টিওপোরোসিস'। এখানে বলবো তিনটে পদ্ধতি। কিভাবে ঘরে বসে ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব? এই তীব্র দাবদাহে নিশ্চয়ই ঘন্টার পর ঘন্টা বাইরে বসে থাকা সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? সহজ তিন উপায়ের মধ্যে রয়েছে তিনটেই খাওয়ার জিনিস। বিশাল দামী কিছু নয়। পাওয়া যায় হাতের কাছেই। আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন আজকের এই প্রতিবেদন।
বিষয়টাকে কিন্তু এত হালকাভাবে নিলে চলবে না। উদ্বেগ, বিষণ্ণতা হোক বা শিশুদের রিকেট, হাঁটতে না পারা হোক কিংবা ‘অস্টিওম্যালাসিয়া’তে আক্রান্ত হয়ে হাড়ে ব্যথা বা ও মাংসপেশি দুর্বল হোক, সবটাই হতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে। এমনকি দীর্ঘদিন ভিটামিন ডি এর অভাবে বয়স্ক নারী-পুরুষ ‘অস্টিওপোরোসিসে’ আক্রান্ত হন। এতে হাড় পাতলা হয়, হাড় ভঙ্গুরও হয়ে পড়ে। তাছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে, আর ওই যে আগেই বললাম সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যে।
ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হবে, মানসিক চাপ, স্ট্রেস বাড়বে। এমনকি অবসাদও গ্রাস করতে পারে। আর সেক্ষেত্রে উপায় হল, রোদে থাকা। কারণ, ভিটামিন ডি এক ধরনের অণুপুষ্টি কণা বা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। যা প্রতিদিনই মানুষের দরকার। এবার হিসেব হলো, মানুষের চাহিদার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ভিটামিন ডি আসে খাদ্য থেকে। বাকি ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশের উৎস সূর্যের আলো। কিন্তু এই তীব্র গরমে, দাবদাহে কোনভাবেই ঘন্টার পর ঘন্টা রোদে বসে থাকা সম্ভব নয়। এতেও আবার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
সেক্ষেত্রে অনেকে কি করে? সহজে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করতে অনেকেই সাপ্লিমেন্টের উপর ভরসা রাখেন। তবে চিকিৎসকেরা বলেন, অতিরিক্ত পরিমাণে সাপ্লিমেন্ট খেলে তার নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট নির্দিষ্ট ডোজে না খেলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। তাই গবেষকেরা বলছেন, সূর্যের আলো বা সাপ্লিমেন্ট শুধু নয়, খাওয়াদাওয়াও এমনভাবে করতে হবে যা থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যেমন–
মাছ : অনেকেই ভাবে টুনা, কর্ড বা ম্যাকারেলের মতো মাছেই শুধু ভিটামিন ডি থাকে। তা নয়। বাঙালিরা রোজ যে মাছ খান, তার কয়েকটাতেও কিন্তু ভিটামিন ডি থাকে। যেমন রোজ যে ধরনের মাছ বেশি রান্না হয় বাড়িতে তার মধ্যে রুই মাছের প্রতি ১০০ গ্রামে ১৫০-২০০ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে। কাতলা, ইলিশ, পাবদা, রূপচাঁদা, মৌরলা মাছেও ভাল পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে।
ঘি : আবার অনেকেই জানেন না ঘি-তেও কিন্তু ভিটামিন ডি থাকে। একটা গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এক চামচ মানে ওই ১৩ গ্রামের মতো ঘি থেকে প্রায় ১৫-২০ আইইউ ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে যদি ভাতের পাতে কেউ দু’চামচ ঘি খান, তা হলেও চাহিদা কিছুটা পূরণ করা যাবে। তা ছাড়া ঘি-তে ভিটামিন এ, ই, কে থাকে। শরীরে ক্যালশিয়াম শোষণে সাহায্য করে ঘি। পরিমিত পরিমাণে খেলে হাড়ের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে নিঃসন্দেহে।
ডিমের কুসুম : ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস ডিমের কুসুম। তথ্য বলছে, ৪০-৫০ আইইউ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় একটি ডিমের কুসুমে। কোলেস্টেরলের ভয়ে যাঁরা ডিমের কুসুম খান না, তাঁরা ভিটামিন ডি-এর জন্য খেতেই পারেন। তবে ডিমের খোলাতেও ভাল পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। দিনে একটা বা দু’টো সেদ্ধ ডিম খেলে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি অনেকটাই মিটবে। তবে ডিম মেপেই খেতে হবে। কী ধরনের ডায়েট করেন, শরীরচর্চা করেন কি না, তার উপরেই নির্ভর করবে সবকিছু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন