সমকালীন প্রতিবেদন : চাইলেই অম্বুবাচী পালন করা যায় না। অম্বুবাচীর তিন দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেবীপুজো বন্ধ? বাড়ির বাইরে পা রাখার আগে সাবধান! প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তি, বুঝে শুনে করুন কাজ। নাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। গরীব দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ালেই বদলে যাবে জীবন। কুমারী মেয়েদের দিকেও বাড়িয়ে দিন সাহায্যের হাত। জানেন? প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তির তারিখ? দেবীর বিশ্রামকালে কোন কোন নিয়ম মানলে খুলবে সৌভাগ্যের দুয়ার? জানুন আজকের এই প্রতিবেদনে।
জেনে রাখা দরকার, সূর্যদেব আর্দ্রা নক্ষত্রে গমন করলেই বর্ষাকাল শুরু হয়। বর্ষার জলে সিক্ত হয়ে ধরিত্রীমাতা উর্বরা হয়ে ওঠে। বর্ষায় ধরিত্রীমাতার সিক্ত হওয়াকেই পৃথিবীর ঋতুমতী হওয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়। যার মানে হল, এই সময় সমস্ত দেবী রজস্বলা থাকেন। সেই কারণেই কি এই সময়কালে মানতে হয়, এত নিয়ম কানুন? জানেন নিশ্চয়ই, কামাখ্যা মন্দিরেও এই দিনগুলো অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয়।
বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা এই সময় কামাখ্যায় আসেন। কিন্তু অম্বুবাচীতে দেবীর পুজো বন্ধ থাকে। এই সময়টিকে দেবীর বিশ্রামকাল হিসাবে মনে করা হয়। পৃথিবীর এই ঋতুমতীদশা তিন দিন ধরে পালন করা হয়। এমন কিছু কাজ আছে, যা এই সময় করলে দেবীর আশীর্বাদ লাভ করা যায়। আবার এমন কিছু কাজ আছে, যা এই সময় একেবারেই করতে নেই। তাতে জীবন ছারখার হতে পারে। তাহলে জেনে নিন সেগুলো কী কী।
এক, অম্বুবাচীর সময় বাড়িতে কোনও শুভ কাজ করা যাবে না। শাস্ত্রমতে, অম্বুবাচীর তিন দিন সব ধরনের মাঙ্গলিক এবং শুভ কাজ, যেমন বিয়ে, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ, গৃহারম্ভ ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা উচিত। কৃষিকাজ সংক্রান্ত কোনো কাজও এই সময় করা হয় না। তবে চতুর্থ দিন থেকে কোনও বাধা থাকে না।
দুই, এই সময় বাড়িতে থাকা সমস্ত দেবীমূর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। মন্ত্র উচ্চারণ করে, ফুল, জলখাবার দিয়ে দেবীমূর্তির পুজো করা যাবে না। শুধুমাত্র ধূপ-দীপ দেখিয়ে প্রণাম করুন।
তিন, খুব জরুরী কোনও দরকার না থাকলে এই সময় সমস্ত ভ্রমণ এড়িয়ে চলাই ভালো।
চার, অম্বুবাচী তিথি শুরু হওয়ার আগে তুলসীগাছের গোড়ায় নতুন করে মাটি দিয়ে সেটাকে একটু উঁচু করে দিতে হবে।
পাঁচ, অম্বুবাচী নিবৃত্তির দিন, মানে শেষ দিনের পর ঠাকুরের পুরনো সাজ বদলে ফেলুন। সিংহাসনে পাতা পুরনো কাপড়ও তুলে ফেলবেন। ঠাকুর ও সিংহাসনকে নতুন সাজে সাজান।
ছয়, এই সময় কুমারী মেয়েদের উপহার দিন। শুধু তাই নয়, তাঁদেরকে খাওয়ান পছন্দমতো খাবার।
সাত, এই সময় দুঃস্থ মানুষকে নিজের সাধ্যমতো যে কোনও ফল দান করতে পারেন।
আট, এই তিন দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে নিজের ইষ্টমন্ত্র জপ করুন।
নয়, মনে করে অম্বুবাচী তিথি চলাকালীন যে কোনও এক দিন স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে উপোস রাখতে পারলে খুব ভাল ফল লাভ করা যায়। এতে নিজেদের মধ্যে ভালবাসা বাড়ে।
দশ, অম্বুবাচী শেষ হলে বাড়ির সদর দরজায় লাল সুতো বেঁধে দিন। মা কামাখ্যার প্রার্থনা করুন।
কিন্তু কবে থেকে শুরু অম্বুবাচী? বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, অম্বুবাচী প্রবৃত্তি মানে শুরু ২২ জুন, রবিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। আর অম্বুবাচী নিবৃত্তি মানে শেষ ২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট গতে। তবে মনে করিয়ে দিই, হিন্দু ধর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব এই অম্বুবাচী কিন্তু চাইলেও সবাই পালন করতে পারে না।
অবশ্যই মনে রাখবেন, সাধারণত বিধবা মহিলারা অম্বুবাচী পালন করতে পারেন। এছাড়া তন্ত্রসাধক, ব্রহ্মচারী, সাধু-সন্ন্যাসীরা এই পবিত্র তিথি পালন করে থাকেন। অর্থাৎ, যে কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই তিথি পালন করতে পারবেন। কিন্তু সধবাদের জন্য এই তিথি নয়। তাঁরা চাইলেও এটি পালন করতে পারেন না।
Sodoba der ki ambubachi ses hole mathay shampoo kora uchit?
উত্তরমুছুন