সমকালীন প্রতিবেদন : ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ লাগলে কিভাবে বাঁচবেন আপনি? যুদ্ধ লাগলে কি করতে হবে? ৭মে বাংলার বুকে এক্স্যাক্টলি কি ঘটবে? আগাম তৈরি থাকুন! রাজ্যের কোন কোন জেলায় হবে যুদ্ধের মহড়া? কী কী হবে? সবটা বিস্তারিতভাবে আজকের প্রতিবেদনে।
কাঁপিয়ে দেওয়া রেইড সাইরেন, যেকোনো মূহুর্তে হতে পারে ব্ল্যাক আউটও। এবার ছাত্র থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে থাকতে হবে তৈরি। সাধারণ মানুষ, ছাত্রদের মক ড্রিল, প্ল্যান ছকে নিয়েছে কেন্দ্র। মূলত পাকিস্তান হামলা করলে কীভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে? সেটাকে সামনে রেখেই দেশের ২৪৪ জেলায় চলবে মক ড্রিল। মহড়া চলবে গ্রামীণ এলাকাতেও। কিন্তু সাইরেন কেন? কিংবা কিসের জন্য?
প্রথমেই বলবো প্যানিক করবেন না। এটা যুদ্ধ নয়, বরং প্রস্তুতি। 'ওয়ার সাইরেন' বাজানোর অর্থ সাধারণ মানুষকে যুদ্ধ বা বিমানহানার মতো পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম ভারত সরকার এমন একটা মক ড্রিলের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যকে। অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি তালিকায় রয়েছে বাংলাও। বাংলার মোট ২৩টি জেলার ৩১ টি মক ড্রিল হবে বলে জানানো হয়েছে। এক্সাক্টলি লোকেশন কি কি আছে? আপনি যেখানে থাকেন আপনার এলাকাতেও কি হবে মক ড্রিল?
জানা যাচ্ছে মোট তিনটি বিভাগ, ক্যাটেগরি এক, দুই এবং তিনে ভাগ করে বলা হয়েছে, কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদহ, শিলিগুড়ি, গ্রেটার কলকাতা, দুর্গাপুর, হলদিয়া, হাসিমারা, খড়্গপুর, বার্নপুর-আসানসোল, ফরাক্কা, খেজুরিঘাট, চিত্তরঞ্জন, বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, কালিম্পং, জলঢাকা, কার্শিয়াং, কোলাঘাট, বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদে মহড়া হবে। এই যে মহড়া হবে, সেগুলোতে বেসিক্যালি কারা অংশগ্রহণ করবে?
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহড়ায় অংশ নেবেন জেলাশাসক সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিক, নাগরিক সুরক্ষা কর্মী, হোমগার্ডেরা। এছাড়াও মহড়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠনের সদস্য এবং স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের। এই গোটা বিষয়টি সামনে আসার পর রেইড সাইরেন সম্পর্কে জানতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন। জানিয়ে রাখি, যুদ্ধের সাইরেন আসলে একটা জোরে শব্দ করার মাধ্যমে সতর্কীকরণ ব্যবস্থা। এটা যুদ্ধ, বিমান হামলা বা দুর্যোগের মতো জরুরি পরিস্থিতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সজাগ করে তোলে।
এর শব্দে একটানা অস্বস্তিকর কম্পন থাকে। এই সাইরেনগুলি সাধারণত প্রশাসনিক ভবন, পুলিশ সদর দফতর, ফায়ার স্টেশন, সামরিক ঘাঁটি এবং শহরের জনবহুল এলাকায় উঁচু করে লাগানো হয়। এর উদ্দেশ্য হল সাইরেনের শব্দ যতদূর সম্ভব পৌঁছানো। যুদ্ধের সাইরেনের আওয়াজ খুব জোরে হয়৷ সাধারণত ২-৫ কিলোমিটার পর্যন্তও এই সাইরেন শোনা যেতে পারে৷ সাইরেন বাজানোর অর্থ, লোকজনকে অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। কিন্তু মক ড্রিলের সময় ভুলেও আতঙ্কিত হবেন না।
খোলা জায়গা থেকে দূরে থাকুন। ঘর বা নিরাপদ ভবনের ভেতরে যান। টিভি, রেডিও এবং সরকারি সতর্কতার প্রতি মনোযোগ দিন। গুজব এড়িয়ে চলুন এবং প্রশাসনের নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। আর মনে রাখবেন জরুরি পরিস্থিতিতে যেমন যুদ্ধ বা ক্ষেপণাস্ত্র অ্যাটাকের সময় একটা অভ্যন্তরীণ ঘর বেছে নিন যেখানে জানালা নেই, পুরু দেওয়াল। আর আলো বন্ধ করুন, প্রয়োজনে টর্চলাইট ব্যবহার করুন। প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সঙ্গে রাখুন। শিশু বা বয়স্ক পরিবারের সদস্যদের শান্ত থাকতে সাহায্য করুন।
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে যে বিষয়ে মহড়া দিতে বলেছে, তার মধ্যে রয়েছে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন ব্যবস্থাকে সক্রিয় করা, নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে সাধারণ মানুষ, বিশেষত পড়ুয়াদের ভূমিকা কী হবে, হঠাৎ ব্ল্যাকআউট হলে কী করণীয় এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানো হবে এই বিষয়গুলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন