Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ : ইউনূসের পদত্যাগের জল্পনায় জল ঢাললেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা

 

Speculation-over-Yunus-resignation

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলা জল্পনায় আপাতত ইতি পড়েছে। শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসসহ সকল উপদেষ্টা স্বপদে বহাল থাকছেন এবং কেউ পদত্যাগ করছেন না। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম এই খবর নিশ্চিত করেছে।

শনিবারের এই বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল না। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই বৈঠক শুরু হয়, যা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা। রিজওয়ানা হাসান অবশ্য বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে যান এবং সাংবাদিকদের জানান, সাধারণ নির্বাচন ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে ইউনূসের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোড়ন ওঠে, যখন এনসিপি দলের আহ্বায়ক ও ইউনূসের প্রাক্তন সহকর্মী নাহিদ ইসলাম একটি আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় হতাশ হয়ে ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’য় গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেন এবং জানান, ইউনূস নানা প্রতিবন্ধকতায় কাজ করতে পারছেন না এবং রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে মতবিরোধে জর্জরিত। এই বক্তব্যের পরই বিভিন্ন মহলে নতুন সরকার গঠনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

তবে শনিবারের বৈঠক এবং ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের বক্তব্য সেই সমস্ত গুজবে ইতি টেনে দেয়। অনেকে মনে করছেন, এটি ইউনূসের একধরনের কৌশল হতে পারে — দলগুলোর কাছ থেকে পুনরায় সমর্থন আদায়ের চেষ্টা। দেশের প্রথমসারির কয়েকজন নেতার মতে, এটি ইউনূসের একটি নাটকীয় পদক্ষেপ, যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দলগুলোকে তাঁর পাশে থাকতে বাধ্য করা।

বিএনপি এবং সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক অবস্থান প্রধান উপদেষ্টার উপর চাপ বাড়িয়েছে। সেনাপ্রধান স্পষ্ট জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন শেষ করে সরকারের বিদায় চায় সেনাবাহিনী। একই দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে বিএনপি। তারা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে নিয়েও সরকারের উপর চাপে রেখেছে।

তবে পদত্যাগের জল্পনার পর বিএনপির অবস্থান কিছুটা নমনীয় হয়েছে। দলের নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁরা ইউনূসের পদত্যাগ চান না, বরং একটি স্পষ্ট নির্বাচনের রোডম্যাপ চান। শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। যদি তাঁরা ভোটের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বা রোডম্যাপ আদায় করতে না পারেন, তবে সরকার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন প্রত্যাহার করে আন্দোলনের পথে নামার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ফলে মুহাম্মদ ইউনূসের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের স্থায়িত্ব অনেকাংশেই নির্ভর করছে বিএনপির সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ফলাফলের উপর।‌ অন্যদিকে, বাংলাদেশে হালে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার ফল খালেদা জিয়ার দলকে চিন্তায় রেখেছে। বেশিরভাগ সমীক্ষার ফল বলছে, অবাধ ভোট হলে আওয়ামী লিগ এগিয়ে থাকবে। বস্তুত এই সব সমীক্ষার ফলাফলের কারণেই শেখ হাসিনার দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে আওয়ামী লিগের অভিযোগ।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন