সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতকে রক্ষা করল 'সুদর্শন চক্র'! মাঝ আকাশেই পাকিস্তানের ড্রোন মিসাইলকে চুরমার করল যে ব্রহ্মাস্ত্র, তার ক্ষমতা কতটা? এতক্ষণে নিশ্চয়ই অনুমেয়। এই 'সুদর্শন চক্র' আসলে কি? আসল কাজটাই বা কি? কিভাবে ভারতকে প্রটেকশন দিয়ে ঘিরে রেখেছে? ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের এই অস্ত্রেই কুপোকাত শত্রু। কোন লোহার গম্বুজ? কি দিয়ে তৈরি? কেন এটার জন্য পাকিস্তান ছুঁতে পারে না ভারতকে? জানুন আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে।
মাঝ আকাশেই এক সে বড়কর এক মিসাইল ধ্বংস করে একেবারে সুপারহিট ভারতের 'সুদর্শন চক্র'! এই সুদর্শন চক্র আসলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে পুতিনের দেশ রাশিয়ায়। এবার একটু ডিটেইলে জানাই, 'অপারেশন সিঁদুর' এ সুদর্শন চক্র বা এস-৪০০ কিভাবে বাঁচাল ভারতকে?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান। মোট ১৫টি স্থানকে টার্গেট করেছিল তারা। এর মধ্যে রয়েছে অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, লুধিয়ানা ও ভুজ। প্রতিটি হামলা ধরা পড়ে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জালে। সফলভাবে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। এটা পাকিস্তানের আক্রমণের প্রমাণ বলে জানানো হয়েছে ভারতের তরফে।
কামাল তো করেছে। এবার জানুন এর কাজ কি? এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে ভিন্ন প্রকৃতির ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা যায়, যা ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত উড়ে গিয়ে শত্রুপক্ষের উপর অব্যর্থ আঘাত হানে। অন্তত ৬০০ কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিতও করতে পারে এই সুদর্শন চক্র। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে দুই ধরনের রেডার প্রযুক্তি রয়েছে, যার আওতায় ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে শত্রুপক্ষকে অ্যাটাক করা যায়।
পাশাপাশি, আকাশে একসঙ্গে ১০টা ২০টা নয়, ৮০টা লক্ষ্যে আঘাত হানা সম্ভব। আবার অন্য কোনও জায়গায় প্রযুক্তি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও, ১৫ মিনিটের মধ্যেই ফের হামলার জন্য প্রস্তুত করে ফেলা যায়। শুধু তাই না, সিগনাল পাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানতে তৈরি হয়ে যায় এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি।
রয়েছে আরও এক গুচ্ছ বেনিফিট। এস-৪০০ এ জ্যামিং প্রযুক্তিকে ঠেকানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। লক্ষ্যে আঘাত হানতে রয়েছে ছোট রেডার টেকনোলজি। সঙ্গে একটা কমান্ড এবং একটা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। এর পাওয়ার এতটাই যে শুধু ভারত নয়। রাশিয়া, চিন, তুরস্ক, বেলারুসের মতো দেশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র টেকনোলজি ব্যবহার করে।
চিন এবং পাকিস্তানকে ঠেকাতে রাশিয়ার থেকেই এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি কেনে ভারত। ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর সেই মতো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সবমিলিয়ে খরচ পড়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির মোট পাঁচটি রেজিমেন্ট কেনার চুক্তি করে ভারত। প্রত্যেক রেজিমেন্টে ৮টি করে লঞ্চার, ৪টি করে ক্ষেপণাস্ত্র থাকে।
প্রথমটা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, দ্বিতীয়টা ২০২২ সালের এপ্রিলে এবং তৃতীয়টা ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারিতে ভারতে এসে পৌঁছায়। রাশিয়ায় তৈরি এই সুরক্ষামূলক সিস্টেম ভারতে যা সুদর্শন চক্র, তা আপাতত ভারতের চার জায়গায় মোতায়েন রয়েছে। পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তার জন্য পাঠানকোটে রয়েছে সুদর্শন চক্র। এছাড়াও রয়েছে রাজস্থান এবং গুজরাটে। এই সুদর্শন চক্রের দৌলতে পাকিস্তানের মতো শত্রুও ঘায়েল ভারতের কাছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন