Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ৪ মে, ২০২৫

২০১৬ এসএসসির বাতিল চাকরি ফিরিয়ে দিতে সুপ্রিম কোর্টে পুনর্বিবেচনার আর্জি

 ‌

Request-for-reconsideration

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই চাকরি বাতিল হয়েছে ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। আর সেই বাতিল চাকরি ফিরিয়ে দিতে চাকরি বাতিল মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালো রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয়েছে আবেদন। রায় ঘোষণার ঠিক এক মাসের মাথায় রায়ে পরিবর্তন চেয়ে মামলা দায়ের করল রাজ্য-এসএসসি, দুই পক্ষই। 

আগামী ৮ মে, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই হাইপ্রোফাইল মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, 'এটা একটা অনুষ্ঠানিকতা। এসব করে কোনও লাভ হবে না। শুধুমাত্র চাকরিহারাদের বোকা বানাতে, তাদের বিক্ষোভ রুখতে এই আবেদন করা হয়েছে। এতে আরও কিছু সরকারি টাকা জলে ‌যাবে।' 

গত ৮ এপ্রিল শীর্ষ আদালতের রায়ে রাতারাতি চাকরিহারা হতে হয়েছে রাজ্যের প্রায় ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীকে। বেনিয়ম, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কথা বলে ২০১৬ সালের গোটা শিক্ষক নিয়োগের প্যানেলই বাতিল করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ‘যোগ্য-অযোগ্য’র তালিকা আলাদা কেন করা গেল না, তা নিয়ে। সেই কাজ ঠিকমতো করা গেলে চাকরি থেকে বাদ পড়তে হতো শুধুমাত্র ‘অযোগ্য’দেরই। ‘যোগ্যতা’ প্রমাণ করা সত্ত্বেও অনেককেই এই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হতো না। 

শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যে পরিমাণে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে যোগ্য–অযোগ্য চিহ্নিত করা অসম্ভব। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও শিক্ষাকর্মীদের ব্যাপারে কোনও শিথিলতা দেখায়নি আদালত। এর পর শিক্ষাকর্মীদের জন্য মামলার রায় প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত ভাতা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

রাতারাতি চাকরি হারিয়ে সুবিচারের দাবিতে তাঁরা এসএসসি অফিস আচার্য ভবন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং শিক্ষাদপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন চাকরিহারা প্রার্থীদের একটা বড় অংশ। দফায় দফায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক, 'যোগ্য-অযোগ্য' তালিকা প্রকাশ-সহ একাধিক দাবিতে সরব হন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, 'এমন কিছু করবেন না যাতে রিভিউ পিটিশন করতে অসুবিধা হয়।' এবার রিভিউ পিটিশন দায়ের হওয়ায় মনে ফের আশা জাগছে তাঁদের, হারানো চাকরি ফিরতেও পারে।

সূত্রের খবর,  রাজ্য ও এসএসসি-র আবেদন, ‘যোগ্য-অযোগ্য’ তালিকা ভালোভাবে যাচাই করে নতুন রায় দেওয়া হোক অথবা আগের রায় আংশিক বদল করা হোক। সেই আবেদনে কতটা সাড়া দেয় শীর্ষ আদালত, সেটাই দেখার। ফলে আপাতত ৮ মে শুনানির দিকে তাকিয়ে চাকরিহারা শিক্ষকরা।মনে একটাই প্রশ্ন, রায় কি বদলাবে? হারানো চাকরি কি আবার ফিরে পাবেন ‘যোগ্য’রা?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‌সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না আগামী ১৩ মে অবসর গ্রহণ করবেন। তার পর প্রধান বিচারপতির পদে বসবেন বিচারপতি বিআর গভই। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার অবসরের সপ্তাহখানেক আগে দায়ের হল পুনর্বিবেচনার আর্জি। নতুন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনের কি সাড়া মেলে, এখন তারই অপেক্ষায় চাকরিহারারা।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন