সমকালীন প্রতিবেদন : রান্না ঘরে যে তেল আপনি ব্যবহার করছেন, সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে বিষ! চমকে গেলেন? তাহলে জানুন আজ আসল সত্যি। হেসেলে আজকাল এমন পাঁচটি তেল ব্যবহার করা হচ্ছে, যেগুলো শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ওই তেলই জটিল সব রোগের কারণ হয়ে উঠছে। তালিকায় রয়েছে কোন কোন তেল? কোন তেলে, কি ক্ষতি? বিস্তারিত জানুন আজকের এই প্রতিবেদনে।
ডাল হোক বা ভাজাভুজি, লুচি পরোটা কিংবা মাছ, মাংস, পোস্ত, তরকারি; তেল ছাড়া রান্নাই যেন ইনকমপ্লিট। এমনকি আলু সেদ্ধ মাখতেও কয়েক ফোঁটা তেল লাগে। তবে শুধু সরষের তেল তো নয়, আজকাল নানারকম রিফাইন্ড অয়েলও ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নায়। আর সমস্যাটা সেখানেই। কারণ, কোন তেলের কী গুণ, কোন তেল উচ্চ তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে গিয়ে খারাপ রাসায়নিক তৈরি করে, সে বিষয়ে জানা নেই বেশির ভাগ মানুষেরই। তাই কেনার আগে এমন পাঁচটি তেল সম্পর্কে জেনে রাখুন, যেগুলোর ব্যবহার আজকাল খুবই হয়, কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়।
রিফাইন্ড সানফ্লাওয়ার অয়েল : বাড়িতে লুচি পরোটা বলুন বা চাউমিন, মুখরোচক খাবার, ভাজাভুজি সাধারণত সাদা তেলেই হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, রোজের ব্যবহারের এই সাদা তেল যদি উচ্চ তাপমাত্রায় ফোটানো হয়, তা হলে এর থেকে অ্যালডিহাইড যৌগ তৈরি হয়, যা পেটে গিয়ে বিষক্রিয়া করে। আসলে এই তেলে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে, যা মাত্রাতিরিক্ত শরীরে গেলে খারাপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া, তেল শুদ্ধিকরণের প্রতিটা ধাপে এমন সব রাসায়নিক মেশানো হয়, যা শরীরে প্রদাহজনিত রোগ বা ব্যথা এবং ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
রিফাইন্ড সানফ্লাওয়ার অয়েল শুধু নয়, তালিকায় রয়েছে এরকম আরও কয়েকটা তেল। যেমন কর্ন অয়েল, রেপসিড অয়েল সহ বিভিন্ন প্রকার বীজের তেল। নেক্সট জানাবো সয়াবিন তেলের ক্ষতিকর প্রভাব।
সয়াবিন অয়েল : এই তেল তুলনামূলক ভাবে সস্তা। কিন্তু এই তেলে এত বেশি পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে ব্যথা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাছাড়া, এই তেলে নানারকম পেট্রোলিয়াম যৌগ থাকে, যা উচ্চ তাপমাত্রায় ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি করে। এমনকি বেশি খেলে হজমেও সমস্যা দেখা দেয়।
কর্ন অয়েল : কর্ন অয়েল আজকাল হেঁশেলে প্রায়ই ঢোকে। মনে রাখতে হবে, এই তেল তৈরিতে হেক্সেন নামক একটা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা পেটের রোগ এবং হার্টের অসুখের কারণ হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই তেল বেশি খেলে শরীরে মেদ বাড়ে এমনকি ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
এরপর বলব এমন একটা তেলের কথা, যেটা রেপসিড অয়েল নামে আমাদের কাছে বেশি পরিচিত।
রেপসিড অয়েল : এই তেলে বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলে হেক্সেন নামক রাসায়নিক তৈরি হবে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রজনন সংক্রান্ত হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হবে, শরীরের ব্যথাও বাড়াবে।
কার্পাস বীজের তেল : মনে রাখবেন, কটনসিড অয়েলের মধ্যে ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ বেশি। এই ট্রান্সফ্যাট কিন্তু রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। যাতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
এখানে আরো একটা বিষয় বলে রাখা দরকার, অনেকে বলেন হার্টের জন্য অলিভ অয়েল ভাল। আবার দক্ষিণে নারকেল তেল খাওয়ার চল রয়েছে। কিন্তু জেনে রাখুন, অলিভ অয়েল ভাল ঠিকই, যখন তা কম তাপমাত্রায় কোনও খাবার রান্না করতে ব্যবহার করা হবে। বাইরের দেশগুলোতে বাঙালি বাড়ির মতো এত ভাজাভুজি খাওয়া হয় না। সেখানে অলিভ তেল কার্যকরী। কিন্তু যদি কেউ অলিভ অয়েলও বেশি গরম করে রান্না করেন, তখন তা ক্ষতিকারক হয়ে উঠবে। তেমনই নানারকম বীজের তেলের ধূমাঙ্ক সর্ষের তেলের চেয়ে কম। তাই যদি বীজের তেল খেতেই হয়, তা হলে নিয়ম মানতে হবে। না হলে রোজের ব্যবহারে এই তেলগুলোই ক্ষতি করবে শরীরের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন