সমকালীন প্রতিবেদন : একটা সময় ছিল, যখন ভারতীয় দল আইসিসি টুর্নামেন্টে বড় ম্যাচে হোঁচট খেত। কিন্তু এখন দৃশ্যটা একেবারেই আলাদা। একের পর এক জয় তুলে নিয়ে রোহিত শর্মার দল বুঝিয়ে দিচ্ছে—এই ভারত সহজে হারার দল নয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে হারানোর পর এবার নিউজিল্যান্ডকেও ৪৪ রানে পরাস্ত করল টিম ইন্ডিয়া। আর এই জয়ের অন্যতম নায়ক বরুণ চক্রবর্তী, যিনি ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ১৫ রান রোহিত শর্মা, ২ রানে শুভমান গিল আর ১১ রানে বিরাট কোহলি প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। রানের চাপ ক্রমশ বাড়ছিল, তবে সেই চাপ সামলানোর দায়িত্ব নেন শ্রেয়স আইয়ার ও হার্দিক পান্ডিয়া। শ্রেয়স ৭৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, অন্যদিকে হার্দিক করেন ৪৫ রান।
অক্ষর প্যাটেলের ৪২ এবং কে এল রাহুলের ২৩ রানের সুবাদে ভারত ২৪৯ রানে পৌঁছায়। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ম্যাট হেনরি ছিলেন বিধ্বংসী। তিনি একাই ৫ উইকেট নেন। এছাড়া কাইল জেমিসন, উইলিয়াম ও রুরকে, মিচেল স্যান্টনার এবং রাচিন রবীন্দ্র প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট শিকার করেন।
২৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডও খুব একটা ভালো শুরু করতে পারেনি। মাত্র ১৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা, যখন অক্ষর প্যাটেলের দুর্দান্ত ক্যাচে মাত্র ৬ রানে ফিরে যান রাচিন রবীন্দ্র। কিন্তু তারপর কেন উইলিয়ামসন ধৈর্য ধরে খেলে ম্যাচ ভারতের নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
একের পর এক পার্টনারশিপ তৈরি করছিলেন তিনি। তবে সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন বরুণ চক্রবর্তী। বরুণের দুর্দান্ত গুগলির ফাঁদে পা দিয়ে ৮১ রানে ফিরে যান উইলিয়ামসন। এরপর যেন পুরো ম্যাচটাই বদলে যায়। তবে শেষ দিকে এসে মিচেল স্যান্টনার ২৮ রান করে দলকে কিছুটা ভালো অবস্থানে পৌঁছান। তারপরেও একের পর এক উইকেট হারিয়ে ৪৫.৩ ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় কিউই দল।
ভারতের হয়ে বরুণ ৫টি উইকেট নেন, যা তার আইসিসি টুর্নামেন্টের অভিষেক ম্যাচে অসাধারণ কৃতিত্ব। কুলদীপ যাদব ২ উইকেট নেন, আর হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল ও রবীন্দ্র জাডেজা প্রত্যেকেই ১টি করে উইকেট তুলে নেন। বরুণের পারফরম্যান্স দেখে বোঝাই যাচ্ছে, ভবিষ্যতে ভারতীয় দলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন।
ম্যাচ শেষে বরুণ চক্রবর্তী বলেন, "শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম। দেশের জার্সিতে বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না, তাই কিছুটা চাপ অনুভব করছিলাম। তবে সিনিয়ররা আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। কোহলি, রোহিত, হার্দিক, শ্রেয়স সবাই পাশে থেকে সাহস দিয়েছেন।"
এই জয়ের ফলে ভারত গ্রুপ লিগে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে উঠল। টানা তিন ম্যাচ জিতে ভারত শীর্ষ স্থানে রয়েছে। ৪ মার্চ সেমিফাইনালে ভারত প্রতিপক্ষ হিসেবে অষ্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট—এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের লক্ষ্য ট্রফি জয়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন