সমকালীন প্রতিবেদন : ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হোমিওপ্যাথির নতুন সম্ভাবনা! পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা এক তরুণ গবেষণার মাধ্যমে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসা জগতে। অত্যাধুনিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য পেয়েছে তাঁর গবেষণা, যা ভবিষ্যতে সুগার সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অভিদীপ্ত হাজরা কলকাতা মেট্রোপলিটন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। বাবা কৃষক, মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী—সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে এমন সাফল্য সত্যিই অনন্য! ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি অসম্ভব নিষ্ঠা ছিল তাঁর। সেই অধ্যবসায়ই এবার রূপ নিল এক যুগান্তকারী গবেষণায়।
হাই ব্লাড সুগারের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথির অধিকতর তরলীকৃত ওষুধ কতটা কার্যকরী, তা নিয়েই গবেষণা চালান অভিদীপ্ত। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা যায়, নির্দিষ্ট মাত্রায় এই ওষুধ গ্রহণ করলে রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে, পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয় না!
এই গবেষণার জন্য দিল্লির আয়ুষ মন্ত্রকের অধীনস্থ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি থেকে বিশেষ সম্মাননা পেতে চলেছেন অভিদীপ্ত। আগামী ১০ এপ্রিল, আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথি দিবসে তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে। অভিদীপ্তর গবেষণার তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রফেসর ডা. দেবর্ষি দাস। তিনি জানিয়েছেন, "এই গবেষণা ভবিষ্যতে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।"
অন্যদিকে, গবেষণার সাফল্যে গর্বিত অভিদীপ্তের পরিবার। বাবা কুশীনাভ হাজরা জানালেন, "এতদিন মাঠের ফসল নিয়েই ছিলাম ব্যস্ত, আজ বুঝলাম—আমার ছেলেও একদিন মানুষের জীবনে আশার আলো বয়ে আনবে!" বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই গবেষণা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির গুরুত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। সাধারণ মানুষ কম খরচে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিৎসার সুবিধা পাবেন।
ব্লাড সুগারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয় রোগীদের। কিন্তু অভিদীপ্তর গবেষণা সফল হলে হয়তো সেই নির্ভরতা কমে আসবে। এখন শুধু অপেক্ষা বৃহত্তর পর্যায়ে এই চিকিৎসার প্রয়োগের। এমন এক সম্ভাবনাময় গবেষণা সত্যিই ভারতীয় চিকিৎসা জগতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন