সমকালীন প্রতিবেদন : বাগদার এক তৃণমূল নেতা নাকি একইসঙ্গে ভারত এবং বাংলাদেশের নাগরিক। তার নাম নাকি ভারত এবং বাংলাদেশ দু দেশের ভোটার তালিকাতেই রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী যখন রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে ভুতুড়ে ভোটারদের চিহ্নিত করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিলেন, ঠিক তখনই পাল্টা অভিযোগে সরব হল বিজেপি নেতৃত্ব।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারী নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার সময় তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেন, বিজেপি ভোটে জিততে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভুতুড়ে ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় তুলে রেখেছে। এভাবেই তারা দেশের একাধিক রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে। এই ভুতুড়ে ভোটারদের চিহ্নিত করে করে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য দলের কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর পর থেকেই এব্যাপারে ময়দানে নেমে পড়েছেন জেলার তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। ঠিক এমনই একটি সময়ে রবিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষ্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মন্ডল। তিনি অভিযোগ করেন, বাগদা ব্লকের এক তৃণমূল নেতার নাম নাকি ভারত এবং বাংলাদেশ– দুই দেশের ভোটার তালিকাতেই রয়েছে।
এদিন বিজেপির জেলা সভাপতি অভিযোগ করেন, ভুয়ো ভোটার নিয়ে তৃণমূল নতুন নাটক শুরু করেছে। বাগদার বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালিদা গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল বিশ্বাস বাংলাদেশের যশোর জেলার বাসিন্দা। ভারতের ভোটার তালিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভোটার তালিকাতেও তার নাম রয়েছে। এই তৃণমূল নেতা বয়রা গ্রামের কন্ট্রাকটার।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে একাধিক নথি দেখিয়ে দেবদাস মন্ডল আরও বলেন, পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আছে তৃণমূল। এরাই ভুয়ো ভোটার তৈরি করছে আর নতুন করে নাটক করছে। এরাই তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতির সম্পদ। এব্যাপারে দলের এক নেতা জেলা শাসককে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সদুত্তর পান নি।
এব্যাপারে শহিদুল বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ছোট ছেলে গদ্দাফি বিশ্বাস এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের ঝামেলা চলছে। আর তাই তাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি যে ভারতীয়, তার পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছিল। সেই সময় তারা বাগদা থানায় গিয়ে তাদের সমস্ত নথি পত্র জমা দিয়ে এসেছেন।
এদিন বিজেপির জেলা সভাপতি যে অভিযোগ তুলেছেন, সেই প্রসঙ্গে তৃণমূলের বাগদা পশ্চিম ব্লকের সভাপতি অঘোর চন্দ্র হালদার বলেন, অভিযোগ শুনলাম। যেকেউ অভিযোগ তুলতে পারে। নথিই শেষ কথা বলবে। তবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। যদি বিজেপির অভিযোগ সঠিক বলে প্রমানিত হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি দলের কেউ হলেও তার বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন