সমকালীন প্রতিবেদন : এই গ্রামে বরফচূড়া হাতের নাগালে! সবুজের সাম্রাজ্যে মুখ লুকোনো এই পাহাড়ি গ্রামের জলে মিশে আছে জাদু! প্রকৃতি তার রূপসুধা ঢেলে একটু একটু করে ছবির মতো এঁকেছে এই গ্রামকে! বরফের রং বদল দেখার পারফেক্ট ডেস্টিনেশন দাওয়াইপানি। চলুন আজ ঘুরে দেখি এই অচেনা পাহাড়ি গ্রাম। জানেন, দাওয়াইপানি নামটার সাথে এই গ্রামের জলের কি অদ্ভুত মিল।
এই গ্রামের জল পান করলেই সব খাবার হজম হয়, কত রোগ সেরে যায়। কথিত আছে, ব্রিটিশ পিরিয়ডে এখানকার জলকে নাকি ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হতো। আর সেই থেকেই এই জায়গার নাম দাওয়াইপানি। একটুও মজা নয়। হ্যাঁ, হয়তো পরিচিতির আলো পেয়েছে খুব কম দিনই। কিন্তু যারা একবার এই গ্রামে গেছেন, তারা জানেন দাওয়াইপানির জল কতটা উপকারী। শুধু স্বাস্থ্য নয়, মনও ভালো করে দাওয়াইপানি।
এখানে ঘরে ঢুকে আসে মেঘ কুয়াশা। আসলে লোকেশনটাই যে মনকাড়া! দার্জিলিংয়ের ঠিক বিপরিতে এবড়ো খেবড়ো দাওয়াইপানি গ্রাম! ফলে এখান থেকে শৈলশহরের দৃশ্য হাঁ করে দেখার মতোই সুন্দর। প্রায় ৬ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে দিনেরবেলায় দার্জিলিংকে দেখলে মনে হয়, গিরিশিরায় অগণিত ফুল ফুটে আছে। আর অন্ধকার নামার পর? দূরের দার্জিলিংকে ছুঁয়ে দেখার লোভ সামলানো তখন অসম্ভব।
আর হ্যাঁ, যেটা না বললে বড় মিস! দাওয়াইপানির সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার এক অদ্ভুত সম্পর্ক। গোটা গ্রামটাই যেন কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউপয়েন্ট। একথা বলার কারণ আছে। দার্জিলিংয়ের মতো রাত থাকতে উঠে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে টাইগার হিলে যাওয়ার দরকার নেই, কষ্ট করে জানলার পর্দা সরিয়ে দিলেই হল। অনেকগুলি হোম স্টে তৈরি হয়েছে মূল এই পাহাড়ি গ্রামের রাস্তার গায়ে। সবগুলি থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়।
একবার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের রংবাহারি শোভা বরফাবৃত হিমালয়ের বুকে দেখলে সহজে ভুলতে পারবেন না। সাধেই কি পর্যটকরা বলেন, দাওয়াইপানির আকাশ জুড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার ক্যানভাস। আর চারিপাশে পাইনের জঙ্গল। পাহাড় চিড়ে গিয়েছে পাহাড়ি রাস্তা। একপাশে সবুজে চা-বাগান। গেলে সহজে ফিরতে মন চায় না।
ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা! দু'দিন থাকলে সকাল থেকে সন্ধ্যে গ্রামের মানুষের সহজ সরল মিশুকে স্বভাব আর অতিথিপরায়ণ মনের পরিচয় আপনার ভ্রমণকে অন্য মাধুর্য দেবে, এটুকু গ্যারান্টি দেওয়াই যায়। সত্যিই সে কি লাবণ্যময় প্রকৃতি। ধাপে ধাপে চাষের জমি। ইতিউতি ঝাউগাছের ঝোপ। গ্রামের পাকদণ্ডী বেয়ে পায়ে পায়ে হেঁটে বেড়ানো আর দু’চোখ ভরে দাওয়াইপানির রূপ দেখা ছাড়া অন্য কোনও কাজ নেই।
না, শীতে নয়। গ্রীষ্মকালে নির্জনতায় হারিয়ে যেতে, এনজেপি বা শিলিগুড়ি থেকে কম-বেশি ৮০ কিমি দূরে পাড়ি জমালেই দাওয়াইপানি গ্রাম। জোড়বাংলো বা ঘুম পর্যন্ত শেয়ার গাড়িতে গিয়ে বাকি পথ গাড়ি ভাড়া করে পেশক রোড হয়ে পৌঁছে যেতে পারবেন এই গ্রামে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন