Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল এবং রাজ্য সরকার

 

Navanna-Avijan

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের উপর ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুবিচার চেয়ে এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'‌ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের আহ্বানে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আর এই অভিযানকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হলো। আর তাকে কেন্দ্র করে এখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।

রাত পোহালেই পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযান। অশান্তির আশঙ্কায় প্রস্তুত প্রশাসন। এবার এই নবান্ন অভিযান নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললো তৃণমূল। অশান্তি পাকাতে মঙ্গলবারের এই কর্মসূচিকে ঘিরে বিজেপি ভয়ংকর প্লট তৈরি করেছে বলেই দাবি কুণাল ঘোষের। দুটি ভিডিও দেখিয়ে তৃণমূল নেতার আরও দাবি, গুলি চালানো এমনকী ওই মিছিল থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে খুনের ষড়যন্ত্রও করা হতে পারে।

এদিকে, রাজ্য পুলিশ মঙ্গলবারেরে এই প্রতিবাদ মিছিলকে ‘বেআইনি’ বলে ঘোষণা করে দিল। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)‌ মনোজ বর্মা জানান, 'কোনও ছাত্র সংগঠনের তরফে আমাদের কাছে ২৭ আগস্টের অভিযান নিয়ে কোনও অনুমতি চায়নি। নবান্ন উচ্চ নিরাপত্তার এলাকা। রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন। এখানে কোনও অনুমতি ছাড়া কোনও কর্মসূচি পালন করা যায় না। তাই এই মিছিল বেআইনি।'‌ তাঁর আরও বক্তব্য, এর আড়ালে প্রতিবাদীদের সঙ্গে মিশে কেউ বা কারা অশান্তি ছড়াতে পারে। 

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, 'একটা চক্র কাজ করছে। তার মধ্যে বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএস প্রমোট করছে। সিপিএম মনোভাবাপন্ন কিছু গোষ্ঠী এর মধ্যে রয়েছে। বঙ্গবিরোধী কিছু গোষ্ঠী-অপশক্তি, যাঁরা এলোমেলো করে দিতে চাইছে বাংলাকে। আমাদের আশঙ্কা, আমরা বারবার পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টা বলেছি। ওই মিছিলে বাইরের রাজ্য থেকেও লোক আনা হতে পারে। এমনকি, তাদের পুলিশের নকল পোশাক পরিয়ে গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। একটা বড় চক্রান্ত চলছে কালকের মিছিল ঘিরে। সোশাল মিডিয়ায় লোক খেপিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা চলছে।'‌

এদিন রাজ্যের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, 'আমাদের কাছে বিশ্বস্ত সূত্রে বেশ কিছু তথ্য এসেছে। সেই তথ্যের অন্যতম একটি হল, পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের তরফে একজন গতকাল শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে এক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন। সে ব্যাপারে আমরা তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করছি। সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে আগামিকাল কিছু দুষ্কৃতী ব্যাপক গন্ডগোল, অশান্তি, হিংসা এবং বিশৃঙ্খলা ছড়াতে পারে বলেও খবর পেয়েছি। আমরা এটাও জেনেছি ‌যে, ভিড়ের সামনে মূলত মহিলা ও ছাত্রছাত্রীদের রাখা হবে। পিছন থেকে গোলমাল পাকানো হবে। এমন পরিস্থিতি করবে যাতে পুলিশ বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়।'

যদিও এই কর্মসূচি নিয়ে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ‌এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'ছাত্রসমাজ এই অভিযানের ডাক দিয়েছে। ওরা তো প্রত্যেক বাড়ি থেকে একজনকে চেয়েছে। আমারও অধিকার আছে আমার বাড়ি থেকে যাওয়ার।'‌ 

নবান্ন অভিযান নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, 'আমার মনে হয়, অরাজনৈতিক ভাবেই অভিযান হওয়া উচিত। রাজনৈতিক নেতারা দূরে থাকলেই ভাল।'‌ বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'বিরোধী দলনেতা কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছেন। কর্মসূচির উদ্যোক্তারা আমার নাম ব্যবহার অনৈতিক কাজ করেছেন।'‌ মঙ্গলবারের এই নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্য সরকার যে যথেষ্ট চিন্তিত, তা স্পষ্ট। গোলমাল ঠেকাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি রাস্তায় ব্যারিকেড বানিয়ে কলকাতায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন