সমকালীন প্রতিবেদন : অধিকাংশ বাঙালির জীবনে চা জড়িয়ে রয়েছে এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গের মতো। অন্য কোনও পানীয় আজ পর্যন্ত চায়ের জায়গা নিতে পারেনি। ভারতজুড়েই চা ক্রমশ পৌঁছেছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। দুধ সহ হোক বা দুধ ছাড়া, চায়ের নেশা যেন বাঙালির রসবোধ এবং রুচিকে একসূত্রে বেঁধে ফেলেছে।
ভারতের অন্য কোনও সম্প্রদায়কে তেমনভাবে সাদা বা লাল চায়ের নেশা ধরাতে পেরেছে বলে মনে হয় না। তবে এবার এই চা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার সময় এসে গেছে। কারণ, বাজারে উপলব্ধ ৩৫ শতাংশ চায়ে এমন বিষাক্ত কিছু পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে, যা আমাদের শরীরে গেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক খোদ একথা জানিয়েছে যে, গুণমান পরীক্ষা ছাড়াই গুঁড়ো চা ঢুকে যাচ্ছে ঘরে ঘরে। আর সুরক্ষাবিধির নজর এড়িয়ে বিপজ্জনক রাসায়নিক যুক্ত চা ঘরে ঢুকতে থাকলে ক্যানসারও থাবা বসাতে পারে বলে আশঙ্কা।
অভিযোগ উঠছে, অসম এবং এরাজ্যের উত্তরবঙ্গের চা প্রস্তুতকারী কিছু সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্তাদের একাংশের যোগসাজশেই এ পদ্ধতি কার্যকর করা যাচ্ছে না। আর সেই কারণেই সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি।
উল্লেখ্য, বর্তমান বাজারে মোট পাঁচ রকমের চা পাওয়া যায়। সর্বোচ্চমানের ফাইন লিফ’ ছাড়াও বাজারে উপলব্ধ ফ্যানিংস চা, মিক্সড চা, সিটিসি চা এবং ডাস্ট চা। এর মধ্যে সিটিসি এবং ডাস্ট মাঝারি বা অতি সাধারণ চায়ের দোকানেও মেলে।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, চা চাষে ‘মনোক্রটোফস’, ‘ডিডিটি’-র মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এ সব শরীরে ঢুকলে ক্যানসারের সম্ভাবনা প্রবল। ফলে গুঁড়ো চায়ে এমন উপাদান রয়েছে কি না, তা জানা খুব জরুরি। কারণ, ওই চা-ই খেয়ে থাকেন বেশিরভাগ মানুষ।
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গুণমান যাচাই না হওয়ায় বিদেশে চায়ের রফতানিও ক্রমশ ধাক্কা খাচ্ছে। কিন্তু তার থেকেও বড় হল এই সস্তার চা কারা পান করছেন। দেশের বেশিরভাগ মানুষই এই চা ব্যবহার করেন।
অনেকেই আবার দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের পেয়ালা ফাঁকা করেন। তবে সবাইকে এবার সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, এক কাপ চা যদি এক কাপ বিষের সমান হয়ে যায়, তাহলে সেটা নিয়ে তো ভাবার সময় এসেই গিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন