Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ২ জুন, ২০২৪

দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে বিচারক হলেন রাজমিস্ত্রির ছেলে

 

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌পেশায় রাজমিস্ত্রি বাবা আজ কাজে বেরোন নি। মাও রয়েছেন বাড়িতেই। কারণ, আজ তাঁদের পরিবারে বইছে খুশির হাওয়া। পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই তালিকায় দেখা গেল তাঁদেরই ছেলে রাহুল শেখের নাম। 

একেবারে যেন অন্ধকারের মধ্যে আলো দেখার মত উচ্ছ্বাস ফুঁটে উঠলো এই পরিবারের সদস্যদের চোখে মুখে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুরের মঙ্গলজোন এলাকার বাসিন্দা রাহুল শেখ একজন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। 

বাবা হাসিবুল শেখ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। মা চান্দেরা বিবি বিড়ি বাঁধার কাজ করেন। এইরকম একটি দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে বড় হয়ে ওঠা রাহুল কিন্তু শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের স্বপ্নকে হারাতে দেননি। 

নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় ১২ র‍্যাঙ্ক করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন। চার ভাই এবং এক বোনের সংসারে রাহুলদের কোনরকমে দিন চলত। কিন্তু ছোট থেকেই দারুণ মেধাবী ছিলেন রাহুল। 

এমনকি তাঁদের বাড়িতে ছিল না বিদ্যুতের ব্যবস্থাও। আর সেই কারণেই কখনও লম্ফ জ্বালিয়ে, আবার কখনওবা মোমবাতির আলো জ্বালিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন রাহুল শেখ। উচ্চমাধ্যমিকের পর আহিরনের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়শুনা করে এলএলবি পাশ করেন। 

এরপর ভিন রাজ্য থেকে এলএলএমও পাশ করেন। এরপর পিএইচডি করছিলেন, পাশাপাশি জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষাও দিতে থাকেন। আর তাতেই ভাগ্য ফিরে যায় রাহুল শেখের। একদিন যিনি দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে, টিউশন করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন, এবার তিনিই বিচারকের আসনে বসে যোগ্য রায় দিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালন করবেন রাহুল শেখ।

রাহুলের এই সাফল্যে খুশি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। রাহুল শেখের দাদা সাহাবুল শেখের কথায়, ‘প্রচন্ড কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে রাহুল। পরপর তিনবারের চেষ্টায় ভাই এই সাফল্য পেল। স্বপ্নপূরণ হলো’ 

অন্যদিকে এমন খুশির খবরে আনন্দাশ্রু দেখা গেল রাহুলের বাবা মায়ের চোখে। ছেলের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দিত তাঁরা। রাহুল শেখের এই লড়াইকে সম্মান এবং কুর্ণিশ জানায় ই–সমকালীন পরিবার। তাঁর জন্য রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।




1 টি মন্তব্য: