সমকালীন প্রতিবেদন : শিক্ষকতার কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন বহু বছর আগেই। কিন্তু তাঁর সৃষ্টিশীল সত্তা থেকে থাকে নি কখনই। আর তাই নিজের প্রতিভার জোরে একের পর এক সাহিত্য রচনা করে গেছেন। সেই সৃষ্টিই তাঁকে মনে করিয়ে রেখেছে তাঁর ছাত্রছাত্রী, গুণগ্রাহীদের।
বনগাঁ মহকুমার সাহিত্য এবং শিক্ষাঙ্গণে নিরঞ্জনকুমার রায় একটি বিশেষ পরিচিত নাম। ১৯৩৯ সালে অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলার শার্সা থানার ঘিবা গ্রামে জন্ম নিরঞ্জনবাবুর। সেখানে প্রাথমিক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেবনগাঁর ঘোষ ইনস্টিটিউশন, ছয়ঘরিয়া রাখালদাস হাইস্কুল, বনগাঁ হাইস্কুলে পড়াশোনা।
এরপর বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় এবং গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের পাট শেষ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ থেকে বি.এড ডিগ্রি লাভ করে বনগাঁর ট্যাংরা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন।
প্রথমে সহ শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং পরে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে পালন করে ১৯৯৯ সালে স্কুলের শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নেন নিরঞ্জনবাবু। শিক্ষকতার পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সেবামূলক কাজের প্রতিও সমান আগ্রহ ছিল তাঁর।
আজীবন মার্কসবাদে বিশ্বাসী নিরঞ্জনবাবুর বর্তমানে বনগাঁর চড়ুইগাছি গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস। সাহিত্য বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যেমন বাংলা সাহিত্যকে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলেছেন, তেমনই গত ৬০ বছর ধরে একের পর এক সাহিত্য সৃষ্টি করে তুলেছেন শ্রদ্ধেয় এই মানুষটি।
এমন এক গুণী মানুষের হাত ধরে আজ বহু ছাত্রছাত্রী জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনত্যম ডা: আশীষকান্তি হীরার উদ্যোগে রবিবার ট্যাংরা কলোনী গ্রামে 'আর একদিন আসিও বন্ধু' সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রে শিক্ষক, সাহিত্যিক নিরঞ্জনকুমার রায়ের ৮৬তম জন্মবর্ষে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে আশীষকান্তি হীরা এবং অর্ধেন্দু বিশ্বাস সম্পাদিত 'আলোর পাখি' নামে একটি বই এর প্রকাশ ঘটে, যেখানে সাহিত্যিক নিরঞ্জনকুমার রায়কে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছে।
এছাড়া, নিরঞ্জনকুমার রায়ের লেখা দুটি উপন্যাস 'বৈচিত্রের মাঝে ঐক্য' এবং 'পৃথিবী আমারে চায়', এক হাজার সনেট সম্বলিত সনেট সমগ্রের দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন