সমকালীন প্রতিবেদন : প্রাচীন ভারতের বেশিরভাগ রাজা মহারাজারা ছিলেন রাজপুত সম্প্রদায়ভুক্ত। রামায়ণ অনুযায়ী ভগবান রামও একজন রাজপুত ছিলেন। আর এই রাজপুতদের মধ্যে তিনটি ভাগ আছে – চন্দ্রবংশী, সূর্যবংশী, অগ্নিকূল প্রমুখ।
চন্দ্রবংশীরা হলেন মহাভারতের নায়ক, কৃষ্ণের বংশধর। অগ্নিকুল হল অগ্নিদেবের পরিবার। আর সূর্যবংশীরা নিজেদের রামের বংশধর বলে দাবি করেন। মূলত অযোধ্যার সরাইরাসি গ্রামে থাকেন এই সম্প্রদায়ের মানুষ।
অযোধ্যা অত্যন্ত প্রাচীন শহর। এই শহর রামের জন্মস্থান বলে বিশ্বাস করেন একাংশের হিন্দুরা। রামের বাবা রাজা দশরথের কোশল রাজ্যের রাজধানী ছিল অযোধ্যা।
খ্রিস্টীয় একাদশ এবং দ্বাদশ শতকে অযোধ্যাতেই কনৌজ রাজ্যের উত্থান ঘটেছিল। অযোধ্যাকে তখন বলা হত আওধ। এরপর, দিল্লির সুলতানশাহি, জৌনপুর রাজ্য এবং অবশেষে ষোড়শ শতকে মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় অযোধ্যা।
তারপরই, ১৫২৮ সালে, বাবরের সেনাপতি মীর বাকি অযোধ্যার রামমন্দির ধ্বংস করে, সেখানে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন বলে দাবি করেন সূর্যবংশীরা।
শোনা যায়, সম্রাট বাবরের বাহিনী যখন উত্তর ভারতে হামলা চালিয়েছিল, রাজপুতরা রুখে দাঁড়িয়েছিল। বাবর বাহিনীকে কড়া প্রতিরোধের মুখে ফেলেছিল তারা। কথিত আছে, সেই সময়ই সূর্যবংশী ঠাকুররা শপথ নিয়েছিলেন, সেখানে ফের রামমন্দির না হওয়া পর্যন্ত, তাঁরা আর পাগড়ি পরবেন না।
এই পাগড়ি ছিল তাঁদের গৌরব এবং সম্মানের প্রতীক। কিন্তু রামমন্দির তার হৃত গৌরব ফিরে না পেলে, তাঁরাও তাঁদের সেই গর্বের পরিধান ধারণ করবেন না বলে ঠিক করেছিলেন।
তবে রামমন্দির নির্মাণ হওয়ার কারণে তাঁরা ভাঙলেন নিজেদের পুরানো ব্রত। আর সেই কারণেই আবার তাঁরা মস্তকে ধারণ করলেন ঐতিহ্যের এই পাগড়ি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন