সমকালীন প্রতিবেদন : স্কুলের সহ শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকের অন্যত্র বদলির নির্দেশ এলে, সেই নির্দেশ বাতিলের আবেদন জানিয়ে স্কুলের পড়ুয়াদের চোখের জল ফেলার খবর প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়। পড়ুয়া এবং শিক্ষকের এমন মধুর বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় সেই বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন সেই শিক্ষক। এটা স্কুলের এবং স্কুলের পড়ুয়াদের প্রতি ভালোবাসার এক দৃষ্টান্ত।
এমন ঘটনার ঠিক উল্টো চিত্র উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের কনিয়াড়া যাদবচন্দ্র হাইস্কুলে। এখানকার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে আন্দোলনে নেমেছে স্কুলেরই এক শ্রেণীর পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকেরা। আর তাদের এই আন্দোলনে পরোক্ষে সমর্থন রয়েছে সেই স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য এবং শিক্ষকদের একাংশের।
বছর চারেক আগে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আসেন অনুপম সরদার। প্রথমদিকে সব ঠিকঠাক থাকলেও একসময় স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সহ কয়েকজন সহশিক্ষক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেন। তারা এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ তুলতে থাকেন। আর তাদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকদের একাংশ।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, স্কুলে নিয়নশৃঙ্খলা লাগু করতে গিয়ে তিনি পরিচালন সমিতি এবং শিক্ষকদের একাংশের রোষানলে পড়ে গেছেন। এমনকি শাসক দলের একাংশও তাঁর বিরুদ্ধে নানা অসহযোগিতা শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই স্কুলের পরিবেশ একটু একটু করে উত্তপ্ত হতে শুরু করে।
তারই জেরে প্রায় আড়াই মাস আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে সেইসময় স্কুলের সামনে আন্দোলন শুরু করে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশ। সেই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন প্রধান শিক্ষক।
পুজোর ছুটি শেষ হয়ে শুক্রবারই স্কুল খুলেছে। আর সেই দিন থেকে ফের বিক্ষোভ, আন্দোলন শুরু হয়েছে। শনিবারও সেই আন্দোলন অব্যাহত ছিল। এদিন পুলিশি নিরাপত্তায় স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক অনুপম সরদার।
তিনি স্কুলে প্রবেশের কিছুক্ষণ পর থেকেই স্কুল থেকে ৫০০ মিটার দূরে কলমবাগান-বেয়ারা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। অচলাবস্থার জেরে এদিন স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়।
এদিকে, স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতির কারনে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদেরই। অবরোধের খবর পেয়ে বেশ কিছুক্ষণ পর বাগদা ব্লকের এক পদস্থ আধিকারিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন