সমকালীন প্রতিবেদন : কাউকে সচরাচর কটুক্তি করার জন্য 'কুমিরের কান্না' কথাটিকে আমরা ব্যবহার করেই থাকি। কথাটির ব্যবহার আসলে খুব মজাদার। তবে এর থেকেও বেশি মজাদার মনে হবে যদি আপনারা জানতে পারেন যে, কুমিরেরা নিজেরা কাঁদুক বা না কাঁদুক, অন্যের কান্নায় বা বলা চলে অন্যের আবেগে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আকৃষ্ট হয় তারা।
কুমিরের অনুভূতি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা চালানোর পরে সম্প্রতি একটি তথ্য সামনে এসেছে- যা মননশীল মানুষকে চমকে দিতে পারে। গবেষণার বিষয় ছিল কুমিরের আবেগ। আবেগ যে কেবল মানুষের আছে তা নয়। বিভিন্ন প্রাণীই কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করে।
তবে এক প্রাণী কি অন্য প্রাণীর কণ্ঠ শুনে পরিস্থিতি বুঝতে পারে? এক গোত্রের প্রাণীর আবেগ অনুভূতি কি অন্য গোত্রের প্রাণী বুঝতে সক্ষম? এটিও গবেষণার বিষয় বটে। সম্প্রতি একটি বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, কীভাবে মানুষ এবং বনমানুষের শিশুর কান্নার প্রতি নীলনদের কুমির প্রতিক্রিয়া দেখায়।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, মানব শিশুর কান্নার শব্দে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায় কুমির। শুনতে রূপকথা মনে হলেও আসলেই এমনটা হচ্ছে। কুমিরেরা মানুষের এবং বানরের বাচ্চার কান্নার শব্দে আকৃষ্ট হয় বলে দাবি করছে ওই গবেষণা।
গবেষকরা বলেছেন, নীলনদের কুমিরগুলো বনমানুষ এবং মানুষের বাচ্চার কষ্টের মাত্রা পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারে। এমনকি, অনেকক্ষেত্রে এই শনাক্তকরণ বা অনুভূতি বোঝার ক্ষেত্রে তারা মানুষের চেয়েও বেশি গভীরতায় স্তন্যপায়ী শিশুদের আবেগ বুঝতে পারে।
বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন, সম্ভাব্য শিকারের যন্ত্রণা পরিমাপ করার জন্য এটি কুমিরের একটি সহজাত ক্ষমতা হতে পারে। গবেষণার প্রয়োজনে গবেষকদল একটি গবেষণা ডাটাবেস থেকে শিশুর কান্নার শব্দ সংগ্রহ করেছেন। এসব শব্দে ভিন্ন ভিন্ন স্তরের কষ্ট প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যে, কুমিরগুলো প্লেব্যাকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায় এবং শিশুর কান্নার শব্দের মানে বোঝার জন্য তারা মুখে বিভিন্ন শব্দ করে। এভাবেই একদিন বাইরের আঘাতে গাছের প্রতিক্রিয়া আবিষ্কার করেছিলেন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। এটা জীবতত্ত্বের গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেই মনে করেন অনেক বিজ্ঞানী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন